শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১২ ১৪৩১ ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
হার্ডিঞ্জ ব্রীজ (Hardinge Bridge) পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ও কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বিভাজনকারী পদ্মা নদীর উপর নির্মিত একটি রেল সেতু। ১৯১৫ সালে ৪ মার্চ ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ এই সেতুর উদ্বোধন করেন। লর্ড হার্ডিঞ্জ এর নামনুসারে ব্রিজটিকে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ডাকা হয়। ভারত উপমহাদেশের রেল যোগাযোগে সহজতর করতে ১৮৮৯ সালে পদ্মা নদীর ওপর রেল সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রীজের ভিত স্থাপন করা হয়েছে পানির সর্বনিম্ন সীমা থেকে প্রায় ১৬০ ফুট মাটির গভীর পর্যন্ত। এই ব্রিজের ১৫ নম্বর স্তম্ভের কুয়া পানি নিম্নসীমা থেকে ১৫৯.৬০ ফুট এবং সর্বোচ্চ সীমা থেকে ১৯০.৬০ ফুট নীচে স্থাপন করা হয়েছে।
তৎকালীন সময়ে এ ধরনের স্থাপনার মধ্যে পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রীজই ছিল সবচেয়ে গভীরতম স্থাপনা। ব্রীজটির নান্দ্যনিকতার জন্য ব্রিটিশ ইন চীফ ইঞ্জিনিয়ার রবার্ট উইলিয়াম গেইলসকে সন্মানসূচক ‘স্যার’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পাশেই নির্মিত হয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম লালন শাহ সেতু। পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ কেন্দ্রিক পদ্মার চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে ঘিরে বিভিন্ন রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট গড়ে তোলা হয়েছে।
স্বাধীনতার সংগ্রামের বিজয় অর্জনের মাত্র ৫ দিন আগে ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী স্যাবর জেট বিমান দিয়ে বোমা ফেলে ব্রিজটিতে এবং ব্রিজটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয় । চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের পর ধ্বংসপ্রাপ্ত বাংলাদেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার পুনরুদ্ধারে সাড়া দেয় বিশ্ব সংস্থা। ব্রিটিশ ও ভারত সরকার অতি দ্রুত হার্ডিঞ্জ ব্রিজ মেরামত করে দেয়। ১৯৭২ সালের ১২ অক্টোবর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ দিয়ে পুনরায় রেল চলাচল শুরু হয়। সেই বোমার একটি অংশ এখনো মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বহন করে চলেছে। পাকশীর বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপকের (ডিআরএম) কার্যালয়ের সামনে বোমাটি সংরক্ষণ করা আছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শনার্থীরা ব্রিজ ভাঙা বোমার খোলসটি দেখতে পাকশী আসেন। বোমার খোলসটি এখন এই এলাকার মুক্তিযুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞের একটি স্মৃতি হয়ে আছে নতুন প্রজন্মের কাছে।
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়