শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১৩ ১৪৩১ ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ১০ জানুয়ারি ২০২৩
রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে হত্যা মামলার আসামি ও পাবনার স্থানীয় সর্বহারা পার্টির(নকশাল) শীর্ষ নেতা ওয়ারেসকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গতকাল সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার গ্রামের বাড়ি পাবনা জেলার আটঘরিয়ার শিবপুর এলাকায়।
র্যাব বলছে, গ্রেপ্তার ওয়ারেস পাবনার আটঘরিয়া থানার চাঞ্চল্যকর জলিল হত্যা এবং সাথিয়া থানার চাঞ্চল্যকর দিপু হত্যা মামলার পলাতক আসামি।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে র্যাব-৪ এর সহকারী মিডিয়া কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম জানান, পাবনার সর্বহারা দলের (নকশাল) প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। পরে সংগঠনের একজন শীর্ষ নেতা হিসেবে নেতৃত্ব দেন ওয়ারেস। সর্বহারা দলের সঙ্গে পাবনা জেলার অন্যান্য সর্বহারা দলের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রায়ই তাদের মধ্যে বিরোধ লেগে থাকতো। বিরোধের জেরে ১৯৯৯ সালের ৮ আগস্ট আটঘরিয়া থানার আব্দুল জলিল গ্রুপের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে জলিল গ্রুপের প্রধান আব্দুল জলিলকে নৃশংসভাবে হত্যা করে ওয়ারেস। এরপরেই আত্মগোপনে চলে যায় তারা। এই হত্যার ঘটনায় পাবনা জেলার আটঘরিয়া থানায় হত্যার প্রধান আসামি ওয়ারেস ও তার দলের ১৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
এছাড়া ওয়ারেস পাবনা জেলার সাথিয়া থানার চাঞ্চল্যকর দিপু হত্যার সঙ্গেও সরাসরি জড়িত ছিলেন। এএসপি মাজহারুল ইসলাম আরও জানান, ১৯৯৯ সালের শেষের দিকে আত্মগোপন করতে ঢাকায় আসেন ওয়ারেস। সে সাভারসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে নিজেকে আড়াল করার জন্য কৌশলে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে ১৩ মাস অবস্থান করেন। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় নিজের পরিচয় গোপন করার জন্য ক্রমাগতভাবে সে পেশা পরিবর্তন করেন। ২০২০ সালে দেশে ফিরে সাভারে অবস্থানরত স্ত্রী-সন্তানদেরকে নিয়ে সেখানে দুধের ছানা সাপ্লাই এর কাজ শুরু করেন। সর্বশেষ সাভারে মাইক্রো গাড়ির ড্রাইভার হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। পরিচয় গোপন করে সাভার এলাকায় বিয়েও করেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে, সর্বহারা জলিল গ্রুপের গ্রুপ লিডার আব্দুল জলিলকে হত্যা এবং দিপু হত্যা মামলার সাথে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন গ্রেপ্তার ওয়ারেস। এছাড়াও তার নামে দেশের বিভিন্ন থানায় হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।
তিনি আরও জানান, ওয়ারেস মাত্র ২২ বছর বয়সে অবিবাহিত থাকা অবস্থায় সর্বহারা দল (স্থানীয় ভাষায় 'নকশাল') প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য হয়। পরবর্তীতে সংগঠনের একজন শীর্ষ নেতা হিসেবে নেতৃত্ব দেয়। সর্বহারা দলের নেতা থাকাকালীন সে পাবনা জেলার আটঘরিয়া এবং সাথিয়া থানায় একাধিক হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকায় তার নামে আটঘরিয়া ও সাথিয়া থানায় হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা দায়ের হয়। গ্রেপ্তার এড়াতে পাবনা থেকে পালিয়ে প্রথমে সাভার পরবর্তীতে আশুলিয়া, ধামরাই, গাজীপুর, বাড্ডাসহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করতে থাকেন। এছাড়া ছদ্মবেশে ক্রমাগত তার অবস্থান পরিবর্তন করে আসছিলেন। আসামি সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পরিচয় গোপন করে বিয়ে করেন এবং ব্যক্তিগত জীবনে সে দুই কন্যাসন্তানের জনক। ১৯৯৯ সালের পর থেকে আসামি আর কোনোদিন পাবনা জেলায় যায়নি।
গ্রেপ্তার আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হন্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়