শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ৬ ১৪৩১ ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০১৮
তবে সারাবিশ্বের মতো এই দেশটিও বেশ ফলো করছে ওয়েব সিরিজ নির্মাণের একটি বিশেষ কৌশল। গল্পে রগরগে যৌনতা রাখতে হবেতো বটে। হলিউডে ওয়েব সিরিজের ধারা শুরু হলেও, যৌনতাকে খুব বেশি প্রাধান্য দেয়নি। কারণ তাদেরতো আলাদা পর্ণ ইন্ডাস্ট্রি আছে। কিন্তু ভারত ও বাংলাদেশ বেশ আষ্টেপিষ্ঠে এই ফর্মূলা ফলো করছে।
এই সময়ে নির্মিত ভারতের বেশিরভাগ ওয়েব সিরিজে দেখা যায় রগরগে যৌনতা। যা সহজেই আমাদের দেশের দর্শক দেখছে অনলাইনে। যার কোন বিধি নিষেধ নেই। বলিউডের দ্বিতীয় সারির অভিনয় শিল্পীদের দিয়ে এসব ওয়েব সিরিজ তৈরী করছে। নওয়াজ উদ্দীনের মত অভিনেতাও অবলীলায় উলঙ্গ হয়ে যৌন দৃশ্যে অভিনয় করছেন!
‘সাক্রেড গেমস’ এ সময়ের সবচেয়ে আলোচিত হিন্দী ওয়েব সিরিজ। যে সিরিজে সাইফ আলী খান, নওয়াজ উদ্দীনরা অভিনয় করেছেন। পুরো সিরিজে রয়েছে একাধিক যৌন দৃশ্য। সে সঙ্গে ভয়াবহতার চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে কলকাতার ওয়েব সিরিজ। যা কলকাতার প্রথম সারির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানই প্রযোজনা করছে।
সম্প্রতি কলকাতার ‘চরিত্রহীন’ ওয়েব সিরিজ নিয়ে ভারতে রীতিমতো হৈচৈ পড়ে গেছে। সেক্স, নেশা আর হিংসায় ভরপুর দেখে প্রায় সবাই এটাকে পর্ন ওয়েব সিরিজ বলেও আখ্যা দিয়েছে। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাসের ওপর ভিত্তি করেই এই ছবিটি বানিয়েছে কলকাতার সবচেয়ে প্রভাবশালী প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসভিএফ। শুধু যৌন দৃশ্য নয়, এর সংলাপও বেশ কুরুচিপূর্ণ।
এদিকে কলকাতার বৌদিরা মাতাচ্ছেন সেখানকার ওয়েব দুনিয়া। চরম অশ্লীলতা ছড়ানো হচ্ছে তাদের দিয়ে। কলকাতার ঝুমা বৌদি, উমা বৌদি, দুপুর বৌদি এসব নিয়ে চলছে তুমুল মাতামাতি। অশ্লীলতা ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে সুন্দর একটা সম্পর্ককে কেন্দ্র করে।
আড়ালে থাকা দেহ ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে থার্ড ক্লাস অভিনয় শিল্পী নামধারী অনেক বৌদির দেখা মিলে এখন এসব ভিডিও ওয়েব সিরিজে। ইউটিউবেও আছে এর ‘একান্ত’ কিছু ভিডিও চিত্র। যেখানে আঠারো প্লাস অশ্লীলতা ছড়ানো হচ্ছে বিনোদনের নামে।
মূলত ইউটিউবে ভিডিও প্রকাশের জন্য কারো অনুমতির প্রয়োজন না থাকায় অহরহ প্রকাশ পাচ্ছে এসব নোংড়া মানষিকতার ক্লিপ ভিডিও। তাছাড়া এর শিরোনাম- হট বৌদি, রঙিলা বৌদি, স্লিম বৌদি, বৌদির হট ভিডিও ইত্যাদি নামে প্রকাশ করা হচ্ছে। আর এসব থার্ডক্লাস ভিডিওর জন্য রন্ধে রন্ধে ছড়িয়ে পড়ছে অশ্লীলতা। এসব থামোনোর কি আসলেই কেউ নেই? নাকি অঘোষিত ভাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে এসব কু-কর্মকে?
তবে প্রশ্ন উঠেছে, এসব কী আসলে কোন সুস্থ সমাজের বিনোদনের মাধ্যম হতে পারে? তাছাড়া ইদানীং বাংলাদেশের অনলাইনেও চলছে মানহীনতা ও অশ্লীলতায় ভরপুর মিউজিক ভিডিও এবং রসালো ওয়েব সিরিজের রমরমা আয়োজন। দেশীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ভুলে গিয়ে নিম্নমানের নির্মাতারা তাদের ব্যবসার স্বার্থে ভিউ ও আর্থিক লাভের আশায় তৈরি করছেন সুড়সুড়ি দেয়া এসব কনটেন্ট।
তবে এ মাধ্যমে এখনো সেন্সর বলতে কিছুই নেই পুরো পৃথিবীতে। তাই ওয়েব সিরিজের নামে যে যার মতো করে কনটেন্ট বানিয়ে ইউটিউবে ছড়িয়ে দিচ্ছে। অবাধ স্বাধীনতার নামে রসালো কনটেন্ট অবশ্যই কারও কাম্য নয়! জনপ্রিয়তার আশায় নির্মিত এসবে যুক্ত হয়েছে যৌনতা, অশ্লীলতা। প্রচারিত ‘দ্য লিস্ট’,‘হেলেন অব ট্রয়’,‘পালাবি কোথায়’,‘আবসিক হোটেল’ প্রভৃতি ওয়েব সিরিজে অপ্রাসঙ্গিক ও অহেতুক যৌনতার সুড়সুড়ি, অশালীন সংলাপ ও অঙ্গভঙ্গি, মাদক গ্রহণের দৃশ্যবালির কারণেই মূলত এই সমালোচনা।
আর এই মাধ্যমকে পুঁজি করে বর্তমানে বাংলাদেশের এক পরিচালক অনন্য মামুনও নির্মাণ করেছেন ‘ফোন এক্স’ ও ‘ইন্দুবালা’ নামে দুইটি ওয়েব সিরিজ। তবে সমালোচিত ও বিতর্কিত হলেও অনেকেই বলছেন, আগামী দিনে ‘ওয়েব সিরিজ’ হতে যাচ্ছে বিনোদনের প্রধান মাধ্যম। তবে এই মুহূর্তে যদি এসব সিরিজ নির্মাণে লাগাম না দেয়া হয়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে দেশের সংস্কৃতি অঙ্গন ধ্বংস হওয়ার উপক্রম হবে।
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়