বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১১ ১৪৩১ ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ৩০ জানুয়ারি ২০২০
হৃদপিন্ডের ফুটো নিয়ে নিরব যন্ত্রনায় ভূগছে কদর আলী। তবুও মুখভরা হাসি তার।
হাসিতে ভরা মুখ তিন বছর বয়সী আলী কদরের। সারাদিন ছুটে বেড়ানো, খেলাধূলা করে দিন কাটে শিশুটির। সমবয়সী অন্য শিশুরা যখন ক্লান্তিহীনভাবে খেলাধূলায় মত্ত থাকে তখন মাঝে মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ে আলী কদর। শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব, বুকে ব্যাথাসহ নানা উপসর্গ দেখা দেয় তার। একমাত্র ছেলের অসুস্থতা ঘিরে দুঃশ্চিন্তায় পড়ে যায় দরিদ্র পরিবার। অসুস্থ ছেলের এমন মুখভরা হাসিতেও এখন মলিন মুখ বাবা-মায়ের।
পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের বালুদিয়ার গ্রামের ফল ব্যবসায়ী রুমন খন্দকার ও গৃহিণী রীমা খাতুনের একমাত্র ছেলে আলী কদর। অসুস্থ হওয়ার পর শুরু হয় কবিরাজি ঝাড়ফুকের চিকিৎসা। কিন্তু রোগ সারার কোনো লক্ষণ না দেখে হাসাপতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরীক্ষা নীরিক্ষায় হার্টে ছিদ্র ধরা পড়ে শিশুটির। এর জন্য শিশুটির অপারেশন প্রয়োজন। লাগবে মোটা অংকের টাকা। চিকিৎসকের এমন কথা শুনে চিন্তায় পড়েন বাবা-মা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেল, খেলনা গাড়িতে চেপে উঠোনের মধ্যে ছুটোছুটি করছে আলী কদর। অপরিচিত লোকজন দেখলেই মুখ লুকায় শিশুটি। সন্তানের এমন দুরন্তপণা দেখেও মুখে হাসি নেই বাবা রুমনের। কারণ পাশের ঘরেই যন্ত্রণায় কাতারাচ্ছেন ক্যান্সারে আক্রান্ত তার বাবা আবদুল কাদের। চাটমোহর রেলষ্টেশনে ছোট্ট দোকানে ফলের ব্যবসা করে সংসার চালাতে গিয়ে হিমসিম খেতে হয় রুমনকে। ধারদেনা ও জমানো কিছু টাকা ব্যয় করে বাবার চিকিৎসা করাতে গিয়ে এখন নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। চিকিৎসার অভাবে একমাত্র ছেলে আলী কদরের হৃৎপিন্ডের ফুটোর আকার বেড়ে চলেছে। একদিকে বাবা, অন্যদিকে ছেলে কার চিকিৎসা করাবেন রুমন? এমন মানসিক চিন্তা ঘিরে ধরেছে তাকে। অপরদিকে ছেলের চিকিৎসা করাতে না পেরে অঝোরে কেঁদে চলেছেন মা রীমা খাতুন।
রুমন খন্দকার পাবনা সমাচার'কে জানান, জন্মের পর আলী কদর স্বাভাবিক ভাবেই বেড়ে উঠছিল। কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে ক্রমেই সে অসুস্থ হতে থাকে। কবিরাজ ও স্থানীয় চিকিৎসক দিয়ে দেখানো হয়। রোগ না সারায় প্রথমে পাবনা, পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. ইকবাল বারীকে দিয়ে দেখানোর পর পরীক্ষা নীরিক্ষার হার্টে ছিদ্র ধরা পড়ে।
পরে তার পরামর্শ মতো ঢাকায় জাতীয় হৃদরোগ ইনিস্টিটিউট ও হাসপাতালে নিয়ে গেলে আলী কদরের সুস্থতার জন্য চিকিৎসক অপারেশনের কথা বলেন। এরজন্য প্রয়োজন হবে দুই লাখ টাকা। পরে টাকার অভাবে চিকিৎসা না করিয়ে ছেলেকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়। চিকিৎসা না করাতে পারলে হয়তো ছেলেকে বাঁচাতে পারবেন না-এমন চিন্তায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। অন্যদিকে ক্যান্সারে আক্রান্ত বাবার চিকিৎসা করাতে পারছেন না! তাই সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
মূলগ্রাম ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুল কুদ্দুস রেজা পাবনা সমাচার’কে বলেন, পরিবারটি খুব অসহায়। একদিকে বাবা, অন্যদিকে ছেলের এমন বড় ধরণের রোগে পরিবারটি দিশেহারা হয়ে পড়েছে। অসহায় পরিবারটিকে সবার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া উচিত।
শিশু আলী কদরের চিকিৎসা সহযোগিতার জন্য তার বাবা রুমন খন্দকারের এই নাম্বারে যোগাযোগ করা যেতে পারে- ০১৭২৫০৯৪৭১৩ (বিকাশ)।
স/এমএস
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়