শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ৬ ১৪৩১ ১১ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ২৬ মার্চ ২০২২
আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। একই সাথে আমাদের মহান স্বাধীনতার ৫১ বছর পূর্ণ হল। ৫১ বছর পূর্তির দিবসটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। ২০২০ এর ১৭ মার্চ থেকে ২০২২ সালের ১৭ মার্চ সময়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও মুজিববর্ষ উদযাপিত হয়েছে। করোনাকালের বিঘ্নিত সময় উপেক্ষা করেও জাতির পিতার প্রতি গণমানুষের শ্রদ্ধা ও ভালবাসা প্রকাশিত হয়েছে।
নতুন প্রজন্ম নতুন করে জাতির পিতাকে জেনেছে, মেনেছে এবং শ্রদ্ধায় অবনত হয়েছে। জাতি নতুন শপথে, নতুন অঙ্গীকারে আবদ্ধ হয়েছে। এ অঙ্গীকারের মধ্যে দিয়েই দেশকে সমৃদ্ধির পথে, টেকসই উন্নয়নের পথে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় নবজাগরণের সৃষ্টি হয়েছে।
মুজিববর্ষ সেই শিক্ষাই জাতির চেতনাকে পুষ্ট করে গেল- বাংলাদেশকে প্রকৃত অর্থেই একটি অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক রাষ্ট্র হয়ে উঠতে হবে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে, সংস্কৃতি ও পরিবেশ উন্নয়নে অনন্য উদাহারণ সৃষ্টি করতে চায় বাংলাদেশ। ৫১তম মহান স্বাধীনতা দিবসের অঙ্গীকারও একই ধারায় জাতীয় চেতনায় প্রবলভাবে সঞ্চারিত হচ্ছে।
আজ সরকারি ছুটির দিন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে সংবাদপত্রসমূহে বিশেষ নিবন্ধ ও ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়েছে এবং সরকারি ও বেসরকারি বেতার ও টিভি চ্যানেলে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচারিত হচ্ছে। ক্ষয়িষ্ণু করোনাকালেএবারের স্বাধীনতা দিবসের উৎসব গত দুবছরের তুলনায় নিঃসন্দেহে আড়ম্বর হবে। দেশের মানুষ নিঃশঙ্কচিত্তে স্বাধীনতা দিবসের উৎসবে সামিল হবে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতির কণ্ঠ চিরতরে স্তব্দ করে দেয়ার লক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে অপারেশন সার্চ লাইটের নামে নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলার মাধ্যমে বাঙালি জাতির জীবনে যে বিভীষিকাময় যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিল।
দীর্ঘ ৯ মাসে মরণপণ লড়াইয়ের মাধ্যমে বাংলার দামাল সন্তানেরা এক সাগর রক্তের বিনিময়ে সে যুদ্ধে বিজয় অর্জনের মাধ্যমে স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনে।
সেনা অভিযানের শুরুতেই হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে তাঁর ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের আগে বঙ্গবন্ধু ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরের সূচনায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং যে কোনো মূল্যে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। মূহূর্তের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণা ওয়্যারলেসের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে দেয়া হয়।
এরপরই শুরু হয় বাঙালি জাতির মরণপণ যুদ্ধ। অস্তিত্ব রক্ষার যুদ্ধ, ভাষা, সংস্কৃতি ও দেশমাতৃকার মর্যাদা রক্ষার যুদ্ধ, স্বাধীনতার যুদ্ধ। দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর জাতি বিজয় অর্জন করে।
এই স্বাধীনতার জন্য জাতিকে প্রচুর মূল্য দিতে হয়েছে। স্বাধীনতার জন্য বিশাল আত্মত্যাগের ইতিহাস পৃথিবীতে আর কোনো জাতির আছে? ৩০ লক্ষ শহিদের আত্মদান আর চার লক্ষ নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে আজকের এই প্রিয় স্বদেশ অর্জিত হয়েছে। একাত্তরের ৯ মাসে বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশিয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনী সোনার বাংলাকে ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত করেছিল। লুটে নিয়েছিল ধন-সম্পদ। জ্বালিয়ে- পুড়ে ছারখার করেছিল জনপদ থেকে জনপদ।
ওই হিংস্র পিশাচদের প্রেতাত্মারা এখনো বাংলাদেশে আছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ মানুষের বিভেদের সুযোগ নিয়ে ওই দানবেরা দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে চলেছে। কিন্তু বাংলার মানুষ ওদের বরদাস্ত করেনি। প্রতিরোধেই জবাব দেয়া হয়েছে। নতুন প্রজন্ম ঐক্যবদ্ধ- মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে আর কোনো কথা নয়, আর কোনো কর্মকা–তৎপরতা নয়। সেই দুর্জয় শপথে উজ্জ্বল- উদ্যম তারুণ্যের অগ্রযাত্রায় শামিল জাতি।
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়