বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১১ ১৪৩১ ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০
ধারের টাকা শোধ দেয়ার কথা বলে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেন (৩৮)কে ডেকে নিয়ে ভাড়াটে মাস্তান দিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। বেড়া উপজেলার নগরবাড়ী ঘাটের আরেক ব্যবসায়ী ইন্দ্রজিত শীলের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন মুক্তার হোসেন। সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার চিথুলিয়ায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ এ অভিযোগে ইদ্রজিত ও তার ৪ ভাড়াটে মাস্তানকে আটক করে কারাগারে পাঠিয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, ব্যবসায়ী ইন্দ্রজিত শীল ও তার তার ভাড়াটে রাসেল, হেলাল, আলাল ও হামজা।
ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেন পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর ইউনিয়নের ক্ষুদ্র গোপালপুর গ্রামের মৃত শহীদুল্লাহ মিয়ার ছেলে। আর ইন্দ্রজিত শীল বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানার নগরবাড়ী ঘাটের মৃত উপেন্দ্র নাথ শীলের ছেলে ও রামকৃষ্ণ শীলের ছোট ভাই।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেন বুধবার সাংবাদিকদের জানান, ব্যবসায়িক সূত্র ধরে ইন্দ্রজিৎ শীল তার কাছ থেকে বছরখানেক আগে সাড়ে তিন লাখ টাকা নেন। কিন্তু টাকা পরিশোধে টালবাহানা শুরু করেন। মাসখানেক আগে থেকে তিনি মুক্তারের ফোনকল ব্লাকলিস্ট করে রাখেন।
এর মধ্যে গত ১৪ জানুয়ারি ইন্দ্রজিৎ শীল ব্যবসায়ি মুক্তার হোসেন কে ফোন করে জানান, শাহজাদপুরে বিসিকে যেতে হবে। সেখানে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে পাওনা টাকা তুলে তাকে শোধ করা হবে। ব্যবসায়ি মুক্তার হোসেন টাকা পাওয়ার আশায় ইন্দ্রজিত শীল এর ডাকে ওই দিন সন্ধ্যায় শাহজাদপুরে বিসিক এলাকায় যান। সেখানে আগেই অবস্থান করছিলেন অভিযুক্ত ব্যবসায়ি ইন্দ্রজিত শীল। রাতে ইন্দ্রজিত কথিত ব্যবসায়ির কাছ থেকে টাকা তুলে দেয়ার কথা বলে মুক্তারকে শাহজাদপুর উপজেলার চিথুলিয়ার কাছে বাড়াবিল নামক স্থানে রিকসাযোগে নিয়ে যেতে থাকেন।পথে ইন্দ্রজিতের সাথে তার এক সাবেক কর্মচারী (ভাড়াটে মাস্তান) রাসেল এসে রিকসায় ওঠেন। রহস্যজনক কারণে ইন্দ্রজিত বাড়াবিলের একটি নির্জন স্থানে এসে রিকসা ছেড়ে দেন। এর কিছুক্ষণ পরে সে নির্জন জায়গায় ইন্দ্রজিতের ভাড়াটে আরো ৩ মাস্তান এসে হাজির হয়। তারা ইন্দ্রজিত ও ইন্দ্রজিতের সাবেক কর্মচারি রাসেলকে কিছু না বলে সরাসরি মুক্তারকে পেটাতে থাকে।
মুক্তার অভিযোগ করেন, সন্ত্রাসীরা তাকে পাইপ দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। তার কাছে থাকা ১৫ হাজার টাকা ও দুটি মোবাইল কেড়ে নেয়। এসময় ইন্দ্রজিতের ভাড়াটিয়া মাস্তানরা একটি স্ট্যাম্পে মুক্তার হোসেনের কাছ থেকে জোর করে স্বাক্ষর করে নেয়। এরই মধ্যে ইন্দ্রজিতের পুরোনো কর্মী ও ঘটনার নেপথ্য নায়ক রাসেল পালিয়ে যায়।
মুক্তার জানান, এ ভাড়াটে মাস্তানরা ইন্দ্রজিতকে কিছু বলেনি। শুধু মুক্তারকে দেখানোর জন্য দু চারটি চড়-থাপ্পড় মারে। যাতে মুক্তার ভাবেন ঘটনাটি হঠাৎই ঘটেছে।
এরপর মুক্তার সব বুঝেও প্রাণ বাঁচাতে ইন্দ্রর কথামত চলতে থাকেন। মুক্তার এ সময় ইন্দ্রজিতের সাথে বাড়াবিলের ওই নির্জন জায়গা থেকে শাহজাদপুরের বোয়ালিয়া বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। শাহজাদপুর উপজেলার বোয়ালিয়া বাজারে এসে মুক্তার হোসেন চিৎকার করে স্থানীয় লোকজনকে ঘটনাটি জানাতে থাকেন। তখন স্থানীয় লোকজন তাদের ঘিরে ধরে পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে শাহজাদপুর থানার এসআই জসিম ও এসআই রেজাউল ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তারা দু’ ব্যবসায়িকে থানায় নিয়ে যান এবং পুরো ঘটনা শুনে তারা ইন্দ্রজিতের পরিকল্পনা জানতে পারেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ইন্দ্রজিত পুরা ঘটনা স্বীকার করেন। এরপর ওই রাতেই পুলিশ ইন্দ্রজিতের ৪ ভাড়াটিয়া মাস্তানকে গ্রেফতার করে ও কারাগারে পাঠায়।
এ ব্যাপারে শাহজাদপুর থানার এসআই রেজাউল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি জানান, ব্যবসায়ি মুক্তার হোসেন উপস্থিত বুদ্ধির জোড়ে প্রাণে বেঁচে গেছেন। তিনি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর না করলে তার আরো ক্ষতি করতে পারত ভাড়াটিয়া মাস্তানরা। তিনি জানান, তাদের জিজ্ঞাসাবাদে ইন্দ্রজিত ঘটনাটি তারই সাজানো বলে স্বীকার করেছেন। গ্রেফতার অপর ৪ জনও সাজানো ঘটনার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে বলে তিনি জানান।
স/এমএমআই
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়