শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ৭ ১৪৩১ ১১ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল ২০২০
করোনার ব্যস্ত প্রশাসন ছুটিতে রেল কর্মকর্তারা। সেই সুযোগে পাবনার ভাঙ্গুড়ায় রেল লাইনের ধার দিয়ে বেড়ে ওঠা গাছ কেটে নিচ্ছেন আনিসুর রহমান (৪৫) নামে স্থানীয় এক কাঠ ব্যবসায়ী। ভাঙ্গুড়া পৌর শহরের গোবিন্দোর পুকুর পাড় এলাকার রেল লাইন থেকে এই গাছ কাটা হচ্ছে।
আনিসুর রহমান ভাঙ্গুড়া পৌরশহরের সারুটিয়া মহল্লার মৃত আরশেদ আলীর ছেলে। এই গাছ পাচারের সঙ্গে স্থানীয় রেলের কর্মচারীরাও জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙ্গুড়া করিমন স্ট্যন্ড থেকে মাটিয়াপুল এলাকা পর্যন্ত থাকা রেল লাইনের গা ধরে বেড়ে উঠেছে কয়েশ ইউক্যলিপটাস গাছ।
সাতজনের একটি দল এইগাছ কাটার কাজ করছেন। বেশ কিছু গাছ কেটে রেল লাইনের পাশে ফেলে রাখা হয়েছে এবং কিছু গাছ স্যলো ইঞ্জিন চালিত গাড়িতে তুলে সাজানো হয়েছে সরিয়ে নেয়ার জন্য। চলছে আরও গাছ কাটার প্রস্ততি। গাছ কাটার এই দলে নের্তৃত্বে রয়েছেন স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান প্রতিবেদককে ছবি তুলতে নিষেধ করেন।
গাছ গুলো কিভাবে কাটা হচ্ছে এমন প্রশ্নের উত্তরে আনিস বলেন, এই গাছগুলে থাকায় সিগন্যাল লাইট দেখতে সমস্যা হয় তাই যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমিত নিয়েই গাছ কাটা হচ্ছে। তার দেওয়া কর্তৃপক্ষের নম্বরে ফোন দিয়ে জানা যায় তিনি রেলের খন্ডকালীন মিস্ত্রী সরোয়ার হোসেন।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, সামাজিক বনায়নের জন্য বর্তমান ভাঙ্গুড়া উপজেলা চেয়ারম্যান বাকী বিল্লাহ প্রায় ২০ বছর আগে ভাঙ্গুড়া রেলস্টেশন থেকে বড়ালব্রীজ রেলস্টেশন পর্যন্ত রেল লাইনের দুই ধার দিয়ে ইউক্যালিপটাস গাছের চারা রোপণ করেন। রেল কর্মচারীদের যোগসাজশ ও স্থানীয় রাজনীতির মদদপুষ্ট ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান দীর্ঘদিন যাবৎ মাঝেমধ্যেই এই গাছ কেটে নেন। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় থাকায় কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খোলে না। এমনি স্থানীয় প্রশাসন ও বিষয়টি জেনেও চুপচাপ রয়েছেন।
ভাঙ্গুড়া রেলস্টেশনের কর্মচারী রুবেল জানান, রেল লাইন পরিষ্কারের কাজ করা হচ্ছে। রেলের ভাঙ্গুড়া উপজেলার হেড মিস্ত্রী সরোয়ারের নির্দেশে সহযোগিতা করে কাঠ ব্যবসায়ী গাছ কেটে নিচ্ছেন। এ বিষয়ে হেড মিস্ত্রির সরোয়ার হোসেন বলেন, ট্রেন চলাচলের সময় কিছু গাছ সিগনালে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। তাই রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং ২০ বছর আগে এই গাছের চারা রোপনকারি ভাঙ্গুড়া উপজেলা চেয়ারম্যান বাকি বিল্লাহর অনুমতি নিয়ে এক ব্যবসায়ী গাছগুলো কেটে নিচ্ছে।
তবে ভাঙ্গুড়া উপজেলা চেয়ারম্যান বাকি বিল্লাহ এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে সাংবাদিকদের জানান। এ ব্যাপারে ভাঙ্গুড়া উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন, সরকারিভাবে দরপত্র ছাড়া সরকারি জায়গা থেকে কোনো গাছ কেটে নেওয়ার এখতিয়ার কারো নেই। প্রশাসনের লোক পাঠিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে গাছ উদ্ধার করা সহ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনা হবে।
স/র
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়