বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১২ ১৪৩১ ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় কোনো রশিদ ছাড়াই এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে আদায় করার অভিযোগ এসেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনসার আলীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। কেন এই টাকা নেওয়া হচ্ছে তা জানেনা শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
তবে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, এসএসসি পরীক্ষার কয়েকটি বিষয়ে অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই পরীক্ষার নম্বরপত্র শিক্ষাবোর্ডে পাঠানোর খরচ হিসেব এই টাকা নেয়া হয়েছে। এর আগে শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা অমান্য করে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছিল এই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের তিনটি বিভাগ থেকে ১১২ জন নিয়মিত শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এছাড়া অনিয়মিত আরো ২০ জন শিক্ষার্থী এবছর পরীক্ষা দিচ্ছে ওই বিদ্যালয় থেকে। আগামী ২৭ শে ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে এসএসসি পরীক্ষা শুরুর আগে এ বিদ্যালয়ে একাধিক বিষয়ে ওই শিক্ষার্থীদের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এসব বিষয়ের পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করেন। আগামী ৮ মার্চের মধ্যে এসব বিষয়ের পরীক্ষার নাম্বারসহ অন্যান্য ব্যবহারিক পরীক্ষার নাম্বার শিক্ষা বোর্ডে পাঠানোর নির্দেশনা রয়েছে প্রতিটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের ওপর। ওই নম্বরপত্র শিক্ষা বোর্ডে পাঠানোর খরচ হিসেবে প্রধান শিক্ষক প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১০০ টাকা করে আদায় করে। তবে টাকা নেয়ার সময় শিক্ষার্থীদেরকে কোনো রশিদ দেয়া হয়নি। অথচ পরীক্ষার ফরম পূরণের পরে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো প্রকার অর্থ না নেয়ার বিধিনিষেধ রয়েছে শিক্ষাবোর্ডের।
শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রধান শিক্ষক এসএসসি পরীক্ষার্থীদেরকে বিদ্যালয়ে হাজির হয়ে ১০০ টাকা করে জমা দিতে বলে। এতে শিক্ষার্থীরা গত সোমবার বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে টাকা জমা দেয়। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মানি রশিদ না দেয়ায় আমরা টাকা নেয়ার কারণ জানিনা। কেন এ টাকা নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে এ বিষয়ে শিক্ষকরা ভিন্ন ভিন্ন কথা বলেন। কোনো শিক্ষক ব্যবহারিক পরীক্ষার কথা বলেন। আবার কেউ কেউ অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার খরচের কথা বলেন।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক পঙ্কজ পাল বলেন, প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার খরচ বাবদ প্রতিটি বিষয়ের জন্য ৩০ টাকা করে মোট ১০০ টাকা নেওয়া হয়েছে। কেন এ টাকা নেয়া হচ্ছে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফরম পূরণের সময় অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার ফি না নেয়ায় পরবর্তীতে এই টাকা নেয়া হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির একজন সদস্য বলেন, প্রধান শিক্ষক নিজের একক সিদ্ধান্তে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে আদায় করেছেন। কেন এই টাকা আদায় করেছেন তা কারোর জানা নেই। এই প্রধান শিক্ষক একের পর এক অনিয়ম করে যাচ্ছে। কিন্তু তিনি প্রভাবশালী হওয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে সাহস পাচ্ছে না।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আনসার আলীর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি কিছু বলতে পারবেন না বলে জানান।
অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের পরে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আর কোনো টাকা নেয়ার সুযোগ নেই। প্রধান শিক্ষক নিলে সেটা খুবই অন্যায় করেছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স/এমএমআই
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়