বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ৫ ১৪৩১ ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০২০
পাবনা বেড়া উপজেলার আমিনপুরে ধর্মীয় এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দানকৃত জায়গা অবৈধ দখল দারের হাত থেকে মুক্তের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে এলাবাসী। আজ ১৬ নভেম্বর (সোমবার) সকালে বেড়া উপজেলার আমিনপুর বাজারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে শিক্ষাক, শিক্ষার্থী, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও এলাবাসী এই কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করেন।
মানবন্ধন শেষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনায় এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। একই এলাকার সরকারে উচ্চ পর্যায়ে থাকা অবসর প্রাপ্ত (সচিব) এস এম আমিনুল ইসলাম ও তার পরিবারের সদস্যরা এই ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জায়গা জমি অবৈধ ভাবে দখল করে বিপুল পরিমান আর্থ আত্মসাত করেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, সাধারন সম্পাদক নজরুল ইসলাম, প্রবীন সাংবাদিক আজাদ মির্জা, ইউপি সদস্য লোকমাস হোসেন, গ্রাম্য প্রধান জালাল উদ্দিন চৌধুরী, আপিল মাহামুদ, জুলহাস উদ্দিন, আ.লীগ নেতা এস এম সৈকত, কালাম মন্ডল ও প্রধান শিক্ষক মোতাচ্ছের আলীসহ অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা।
বক্তারা বলেন, ১৯২৪ সালে অত্র এলাকার দরিদ্র অসহায় পরিবারের ছেলে মেয়েদের প্রাথমিক ও ধর্মীয় শিক্ষা দেয়ার জন্য অত্র এলাকার সমাজ সেবক দানবীর লতিফুন্নেছা ও হাজী আব্দুল বারী নামে দুইজন তাদের সম্পদের সকল কিছু মৃত্যুর পূর্বে ওই প্রতিষ্ঠানের নামে ওয়াক্ফ করে দিয়ে যান।
শতবর্ষের এই ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ধীরে ধীরে এলাকায় বেশ সুনাম অর্জন করে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা এই বিশাল পরিমান সম্পদ সেই সময়ের ওয়াক্ফ থাকা সভাপতি শর্তভঙ্গ করে ১৯৫৮ সালে আবু মোঃ আবদুল্লাহকে এই সম্পদের মোতাওয়লী নিযুক্ত করেন।
সেই ব্যক্তির মৃত্যুর পরে তার দুই ছেলে মোঃ আজিজুল করিম ও এস এম আমিনুল করিমসহ তার পরিবারের সদস্যদের নাম দিয়ে তিন বছরের জন্য মোতওয়াল্লী নিযুক্ত হন। অবৈধ ভাবে এই দায়িত্ব প্রাপ্তি পরে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে সরকারি তহশীল অফিসের নিকট ভাড়া প্রদান করেন তারা।
শুধু তাই নয় এই প্রতিষ্ঠানের নাম থাকা ৮২ বিঘা জমির ১৩ বিঘা সম্পদ মোতওয়াল্লী এস এম আমিনুল করিম নিলাম দেখিয়ে নিজেদের নামে রেকর্ড করে নিয়ছে বলে জানা গেছে।
বক্তারা বলেন, এই বিষেয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আদালতের আশ্রয় গ্রহন করা হলে। বিজ্ঞ আদালত পূণরায় মোতওয়াল্লী নিয়োগ না দেয়া পর্যন্ত সকল কিছুর উপরে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। আদালতের আদেশ অমান্য করে অবৈধ মোতাওয়াল্লী ওই প্রতিষ্ঠানের সকল জমিজমা লিজ প্রধান করছে। প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা সম্পদ সাধারন মানুষের কাছে বছর চুক্তিতে লিজ দিয়ে তিনি কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
বক্তারা অরো বলেন’ অবৈধ দখলদার এস এম আমিনুল করিম বিরুদ্ধে কথা বল্লে তিনি প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ে ব্যাক্তিদের ভয়ভৃতি দেখান। তাই প্রভাবশালীর হাত থেকে ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিপুল সংখ্যক জায়গা দখল মুক্তের জন্য প্রশাসনসহ সরকারের উর্ধতন কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এলাবাসী।
বর্তমানে প্রায় এক বিঘা জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত এই ধর্মী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় সারে তিনশত ছেলে মেয়ে প্রাথম শ্রেনী থেকে ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত শিক্ষা গ্রহণ করছে। সাতজন শিক্ষক ও দুইজন কর্মচারী দিয়ে দুটি শাখাতে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম।
২২ জন এতিম ধর্মীয় শিক্ষার্থীর আবাসনসহ খাওয়া ব্যবস্থা করছে প্রতিষ্ঠানটি। মাসে লক্ষাধীক টাকা ব্যায় করে এই প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রেখেছে স্থানীয়রা। প্রতিষ্ঠানটির আয়ের নিজেস্ব উৎসহ থাকলেও অবৈধ দখলদারের কারনে নানা প্রতিকুলতা আর অর্থনৈতিক সমস্যা নিয়ে চলতে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটিকে।
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়