শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১২ ১৪৩১ ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ২ ফেব্রুয়ারি ২০২১
পাবনার বেড়া উপজেলার পেঁচাকোলা ও পাইখন্দ নামক দুটি স্থানে যমুনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধে বিপজ্জনক ধস দেখা দিয়েছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে জেলা বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তোলার ফলে এমন ধস দেখা দিয়েছে।
২০০৫ সালের পর থেকে গত প্রায় ১৬ বছরে তীর রক্ষা বাঁধের তেমন কোনো সংস্কার হয়নি। তবে মাঝে মধ্যে বাঁধের কোনো অংশ ধসে গেলে পাউবো দায়সারাভাবে সেটি মেরামত করে দিয়েছে।
পাউবোর কর্মকর্তা ও এলাকাবাসীর মতে তীর রক্ষা বাঁধের অনেক স্থানই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বাঁধ নির্মাণের পর সেটি দীর্ঘদিন ধরে ফেলে রাখা হলেও এর রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ এখনও নেওয়া হয়নি।
এর ওপর তীর রক্ষা বাঁধের কাছাকাছি যমুনা নদীর বেশ কিছু স্থান থেকে একটি চক্র অবৈধভাবে বালু তুলছে। এ ছাড়া তীর রক্ষা বাঁধের ওপর দিয়ে ট্রাকে করে বালু বহন করাও হচ্ছে। ফলে সব মিলিয়ে বাঁধটি দ্রুত দুর্বল হয়ে পড়ছে।
এলাকাবাসী জানান, মাসখানেক হলো বেড়া উপজেলার হাটুরিয়া-নাকালিয়া ইউনিয়নের পেঁচাকোলা ও বেড়া পৌরসভার পাইখন্দ এলাকায় যমুনার তীর রক্ষা বাঁধে ধস দেখা দেয়। শুরুতে তীর রক্ষা বাঁধের একটি-দুটি করে সিসি ব্লক ধসে যেতে থাকে। কিন্তু এখন ধসের বিস্তৃতি ব্যাপক বেড়েছে। ইতিমধ্যেই ওই দুটি স্থান থেকে কয়েক শ সিসি ব্লক যমুনায় ধসে গেছে। এ অবস্থায় ওই দুটি জায়গার বাসিন্দারা চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
এলাকাবাসীর আশঙ্কা, দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে ধস আরও বিস্তৃত হয়ে গোটা এলাকা জুড়ে ভাঙন দেখা দিতে পারে। এতে কয়েকটি গ্রামসহ জেলা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পাইখন্দ গ্রামের সহিতন খাতুন ও বুলবুলি খাতুন বলেন, ‘ধস দেখা দেওয়ায় এই গ্রামের সগলেই খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি। এই জায়গায় নদীর ¯্রােত যেমন বাড়িছে তেমনি ব্যাপক গভীর হয়া গেছে। বালু তোলার জন্যেই আমাগরে বাড়িঘর আজ যমুনায় যাওয়ার উপক্রম হইছে।’
পেঁচাকোলা গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য সেল্টু শেখ বলেন, ‘ইতিমধ্যেই কয়েক শ সিসি ব্লক নদীতে চলে গেছে। ধস যেভাবে বেড়ে চলেছে তাতে পেঁচাকোলা গ্রামসহ আশেপাশের অন্যান্য গ্রামগুলোতেও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। পাউবো এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে।’
এ ব্যাপারে পাউবোর বেড়া কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল হামিদ বলেন, ‘বাঁধের স্বার্থে অবৈধ বালু তোলা যে কোনোভাবে বন্ধ করতে হবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসন বরাবর চিঠি দিয়েছি।
এর পাশাপাশি একাধিকবার যমুনা নদীতে গিয়ে বালু তুলতে উত্তোলনকারীদের নিষেধ করেছি। আর ধসে যাওয়া জায়গা পরিদর্শন করে ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহা. সবুর আলী বলেন, ‘বেড়ায় আমি সদ্য যোগ দিয়েছি। তাই এ ব্যাপারে এখনও অভিযোগ পাইনি। তবে এমন হয়ে থাকলে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়