বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১০ ১৪৩১ ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ৩১ মে ২০২১
কালের পরিক্রমায় এবং নানা প্রতিকূল অবস্থার কারণে পাবনার সুজানগরের ঐতিহ্যবাহী মৃতশিল্প এখন মৃতপ্রিয়। দিনের পর দিন ঐ শিল্প এজনপদ থেকে বিলুপ্ত হতে বসেছে। অথচ একসময় জেলার বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জে সুজানগরের তৈরী নানা রকমের বাহারি মৃতশিল্পের অত্যন্ত চাহিদা ছিল।
উপজেলার মানিকহাট ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জানান, গত ১০/১২ বছর আগেও উপজেলার রাইপুর, মাছপাড়া, মানিকদীর পালপাড়া, হেমরাজপুর, সাতবাড়ীয়া, মানিকহাট, সাগরকান্দী এবং শ্যামগঞ্জসহ বিভিন্ন গ্রামে মৃতশিল্পের বাহারি বাসন-কোসন তৈরী করা হতো। সে সময় ঐ সকল গ্রামের শত শত নারী-পুরুষ সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মৃতশিল্পের তৈরী বাহারি হাড়ি, পাতিল, থালা, বদনা, গামলা, কলসি, পেয়ালা, পুতুল এবং দই তৈরীর সড়াসহ বিভিন্ন বাসন-কোসন তৈরী করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। জেলার সর্বত্র তখন সুজানগরের মৃতশিল্পীদের তৈরী বাসন-কোসনের যথেষ্ট চাহিদাও ছিল। কিন্তু কালের পরিক্রমায় প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈরী তৈজসপত্র বাজার দখল করে নেওয়ায় মাটির তৈরী বাসন-কোসনের এখন আর কদর নেই। উপজেলার হেমরাজপুর গ্রামের স্বপন পাল বলেন প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈরী তৈজসপত্র মাটির তৈরী তৈজসপত্রের চেয়ে বেশি টেকসই হয়। সে কারণে বর্তমানে অধিকাংশ মানুষ মাটির তৈরী তৈজসপত্রের পরিবর্তে প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈরী তৈজসপত্র কিনে থাকেন। ফলে দিনের পর দিন মৃতশিল্পের কদর একদম কমে যাচ্ছে। এতে মৃতশিল্পীরা তাদের পৈতৃক পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে। উপজেলার মানিকদীর গ্রামের বাবলু পাল বলেন বর্তমানে বাজারে মাটির তৈরী স্যানিটারী কূপ চাকা, হাড়ি, গামলা, কলসি ও দই তৈরীর সড়ার বেশ চাহিদা রয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় টাকা-পয়সা অভাবে তা তৈরী করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সরকারি ঋণ সহায়তা পেলে ঐতিহ্যবাহী ঐ বাসন-কোসন তৈরী করা সম্ভব বলে ভুক্তভোগী মৃতশিল্পীরা জানান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রওশন আলী বলেন মৃতশিল্পীরা যাতে সরকারি ঋণ সহায়তা পান সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়