শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ৫ ১৪৩১ ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ২৮ জুন ২০২০
পাবনার কৃতি সন্তান প্রফেসর ডা.খলিলুর রহমান। তার এ্যানেসথেসিয়া জীবনের (২৫-০৬-১৯৭০ থেকে ২৫-০৬-২০২০) ৫০ বছর পূর্তি হয়েছে।
গেলো ২৫ জুন ছিলো তার জীবনের এই গৌরবময় দিন। পাবনা শহরের সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের পাশের বাড়ি তার পৈত্রিক বাড়ি। বাংলাদেশ রেলওয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মরহুম মোখলেছুর রহমানের বড় ছেলে তিনি।
দেশের বাড়ি ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশি রূপপুর বিবিসি বাজার সংলগ্ন। ১৯৪৬ সালের ১৮ জানুয়ারি জন্মগ্রহন করেন তিনি। জীবনের প্রথম স্কুল ছিলো ভাঙ্গুড়া উচ্চ বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয় থেকেই ১৯৬১ সালে প্রথম বিভাগে মেট্রিক পাশ করেন তিনি। ১৯৬৩ সালে ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন।
এরপরে ভর্তি হন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে এবং ১৯৬৯ সালে সেখান থেকে সফলতার সাথে এম.এম.বিএস পাশ করে বের হন। বাংলাদেশ কলেজ অফ ফিজিশিয়ান এন্ড সার্জন থেকে ১৯৭৬ সালে এ্যানেসথিওলোজি বিষয়ে এম.ফি. পি.এস ডিগ্রী অর্জণ করেন।
১৯৭৮ সালে লন্ডন থেকে ডিপ্লোমা ইন এ্যানেসথেসিয়া বিষয়ে ডি.এ ডিগ্রী লাভ করেন তিনি। একইসালে আয়ারল্যান্ড থেকে ফেলোশীপ ইন এফ.এ.আর,সি,এ ডিগ্রী অর্জণ করেন।
১৯৭০ সাল থেকে ১৯৭৬ সাল অবধি চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ্যানেসথেসিষ্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। ১৯৭৯ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে চাকরি করেন। ১৯৮০ সাল থেকে ১৯৮৯ সাল অবধি ঢাকা Ịদরোগ ইনষ্টিটিউটে এসোসিয়েট প্রফেসর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ইনষ্টিটিউট অফ পোষ্ট গ্রাজুয়েট মেডিসিন এ প্রফেসর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ১৯৮৯ সাল থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত। ঢাকা মেডিকেল কলেজে ১৯৯৪ সাল থেকে ২০০৩ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে অবসরে যান তিনি।
ইংল্যান্ডে ৩ বছর, জাপানে ৬ মাস ও সুইডেনে ৩ মাস অবস্থান করে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। বাংলাদেশে এ্যানেসথিসিয়ার মূল কৌশলের সূচনা করেন তিনি।
ইওসিতে এ্যানেসথিসিওলোজিষ্টদের প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেন তিনি। এানেসথেসিয়ায় শ্বাস প্রশ্বাসের নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়া হিসেবে ব্রেইন সার্কিটের সাথে প্রথম সকলকে পরিচয় করান পাবনার এই কৃতি সন্তান।
বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে এ্যানেসথিয়াটিক চার্টের সূচনা করেন তিনি। তিনি বাংলাদেশ এ্যানেসথিসিয়া সোসাইটির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য।
তিনি ইংল্যান্ডের সেইফ অনুষদের ওবিএস প্রোগ্রামের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজে কার্ডিও পালমোনারী কোর্স (সিপিআর) এর সূচনা করেন তিনি।
বর্তমানে বারডেম হাসপাতালের অবৈতনিক কনসালটেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন দেশের প্রবীণ এই চিকিৎসক। তিনি সরকারের কোভিট-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির একজন সদস্য।
অত্যন্ত সদালাপী বিনয়ী ও সাদাসাদি জীবনের অধিকারী ডা. খলিলুর রহমান পেশাগত জীবনের বাইরেও সাংস্কৃতিক বলয়ে রয়েছে তার বিচরণ। তিনি ছায়ানটের দ্বিতীয় ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। নিজস্ব বেশ কয়েকটি সিডি রয়েছে তার। পাবনাতে একুশে বইমেলার বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করে দর্শক শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন তিনি।
তার অপর দুই ভাইদের মাঝে ডা. হাসান সরোয়ার মানিক একজন স্বনামেখ্যাত সার্জারী চিকিৎসক, যিনি এখন অষ্ট্রেলিয়া রয়েছেন। আরেক ভাই ইফতেখারুল আজম মনি তিনি প্রকৌশলী। প্রফেসর ডা. খলিলুর রহমানের স্ত্রী ফাউজিয়া বেগম গৃহিনী। মেয়ে ইশরাত জেবিন চিকিৎসক ও ছেলে ফাহিম অর রহমান প্রকৌশলী।
তিনি পাবনার বিশিষ্ট আইনজীবি নোটারী পাবলিক মোহাম্মদ মাসুদের চাচাতো ভাই ও সাংবাদিক ছিফাত রহমান সনমের চাচা। প্রফেসর ডা. খলিলুর রহমান তার শুভানুধ্যায়ীদের কাছে আগামী দিনগুলোর জন্য দোয়া প্রার্থনা করেছেন।
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়