বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ চৈত্র ১৪ ১৪৩০ ১৮ রমজান ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ২৯ ডিসেম্বর ২০২১
পাবনার চক ছাতিয়ানী মোল্লাপাড়া মহল্লার ৩ বন্ধুর মৃত্যু বিষাক্ত মদপানে নয়, ককটেল (এক ধরনের মিশ্রিত নেশা) খেয়ে হয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা বিভাগের তদন্তে ও হাসপাতালে ভর্তি অসুস্থ দুজনের জবানবন্দিতে এ তথ্য উঠে এসেছে।
মৃত ব্যক্তিরা হলেন-ছাতিয়ানি মহল্লার রবিউল ইসলাম রুমন (৩৫), জনি হোসেন (৩০) ও রুবেল হোসেন (৩২)। অপর দুই বন্ধু সবুজ হোসেন ও শহিদুল ইসলাম এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা যায়, অতিরিক্ত মদপানে তিন বন্ধুর মৃত্যু ও দুজন গুরুতর অসুস্থ হওয়ার খবর প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। তদন্তে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন কর্তব্যরতরা। পাবনা জেনারেল হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি থাকা শহিদুল ইসলামের জবানবন্দি গ্রহণ করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর পাবনা সদর সার্কেলের পরিদর্শক মো. শাহজালাল খান।
শহিদুলের জবানবন্দির বরাত দিয়ে সার্কেলের পরিদর্শক আজ বুধবার সকালে বলেন, তাঁরা মদ পান করেননি। রুমনের সঙ্গে শহরের বড় বাজার যান তিনি। তাঁকে মোড়ে দাঁড় করিয়ে রেখে ভেতর থেকে একটি পলিথিনে স্পিরিট আনে রুমন। এরপর তাঁরা ৫ জন ঘুমের বড়ি, কোক ও যৌন উত্তেজক ওষুধ পানির সঙ্গে মিশিয়ে ককটেল (এক ধরনের মিশ্রিত নেশা) বানিয়ে খান। পরে বিরিয়ানি ও চিপস খাওয়ায় গ্যাসের কারণে হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
রাজশাহী বিভাগীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা বিভাগের সহকারী পরিচালক রওনক আক্তার মিতু বলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকা সবুজ হোসেনের জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে।
সবুজের জবানবন্দির বরাত দিয়ে রওনক আক্তার মিতু বলেন, রুমন পাবনার বড় বাজার থেকে একটি পলিথিনে ৫০০ মিলিগ্রাম সাদা এক ধরনের লিকুইড নিয়ে আসেন। সম্ভবত লিকুইডটি ‘স্পিরিট’ হবে।
এরপরে তাঁরা চক ছাতিয়ানীর মোল্লাপাড়ার জনৈক শিল্পীর নির্মাণাধীন বাড়িতে এক সঙ্গে হয়ে ঘুমের বড়ি, কোক ও যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট অল্প পরিমাণ পানিতে মিশিয়ে (ককটেল) খান। পরে বিরিয়ানি ও চিপস খায়। এরপর থেকে অসুস্থ বোধ করেন তাঁরা।
হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে রুমন, জনি ও রুবেলের মৃত্যুর কথা শুনে কেঁদে ফেলেন শহিদুল ও সবুজ। জবানবন্দিতে তাঁরা বলেন, কেউ যেন এমনভাবে ককটেল বানিয়ে না খায়। খুব কষ্ট পেয়েছি, মৃত্যুর যন্ত্রণা যে কি তা খুব কাছ থেকে দেখেছি।
সার্কেলের পরিদর্শক মো. শাহজালাল খান বলেন, তিন বন্ধুর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হয়। যেখানে অসুস্থদের জবানবন্দি থেকে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জবানবন্দিসহ তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ ডিসেম্বর ভোররাতে পাঁচ বন্ধু মাদক সেবন করেন। তাঁদের মধ্যে তিনজন মারা যান। বাকি দুই বন্ধু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়