বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১২ ১৪৩১ ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ১৫ এপ্রিল ২০২০
একমাত্র কন্যা সন্তানসহ ডা. জাকারিয়া খান মানিক ও তার সহধর্মিনী ডা. বিএম মারজিয়া।
চারিদিকে এখন করোনা ভাইরাস আতঙ্ক! দেশে বেড়েই চলছে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিন লাশের মিছিলে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন নাম! উদ্বেগ আর উৎকন্ঠায় কাটছে সবার জীবন। ভয়াবহ এমন পরিস্থিতির মধ্যেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যেতে হচ্ছে চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের।
এরইমধ্যে করোনা আতঙ্কে দেশ বিদেশের অনেক চিকিৎসক নিজের জীবনের ভয়ে তাদের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। ঠিক এমন কঠিন সময়ে দুগ্ধপোষ্য কোলের সন্তান রেখে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছেন পাবনার এক ডাক্তার দম্পতি।
এরা হলেন, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. জাকারিয়া খান মানিক এবং তার সহধর্মিনী আটঘরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. বিএম মারজিয়া।
বাড়ি জেলার ভাঙ্গুড়া উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের বেতুয়ান গ্রামে। তাদের রয়েছে ৮ মাস ১১ দিন বয়সের একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান। নাম তার জুয়াইরিয়া। প্রতিদিন সকাল হলেই আদরের একমাত্র সন্তানটিকে বাসায় রেখে কর্মস্থলে চলে যেতে হয় তাদের।
এ সময় শিশুটির দেখাশোনা করেন কাজের মেয়ে আকলিমা। জুয়াইরিয়া এখন অনেক কিছুই বুঝতে শিখেছে। মায়ের অভাব তাকে দারুণ পীড়া দেয়। চার দেওয়ালের মাঝখানে কচি চোখে সে বার বার মাকে খুঁজতে থাকে। কাঁদতে কাঁদতে একসময় সে আকলিমার কোলেই ঘুমিয়ে পড়ে। তারপরও নিজেদের দায়িত্ব থেকে সরে আসেননি এ ডাক্তার দম্পতি। চিকিৎসেবা প্রদানের পাশাপাশি হাসপাতালে আগত রোগীদের করোনা ভাইরাস বিষয়ে সচেতনতামূলক বিভিন্ন দিক-নির্দেশা দিয়ে যাচ্ছেন তারা।
এ ব্যাপারে ডা. জাকারিয়া খান মানিক বলেন, অসুস্থ মানুষের সেবা দেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমার শিশু সন্তানটির প্রতি যেমন রয়েছে আমার মমত্ববোধ,দায়িত্ব-কর্তব্য তেমনি স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা মানুষগুলোর দায়িত্ব আমি কোনভাবেই এড়িয়ে যেতে পারিনা।
ডা.বিএম মারজিয়া বলেন,“সন্তান নিয়ে ভয় তো লাগেই। তবে যতটা সম্ভব সাবধাণতা অবলম্বন করে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। দেশের এমন কঠিন পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে দাঁড়ানোটা আমাদের বড় কর্তব্য।”
তিনি বলেন, “শুধু চিকিৎসক নন, এখন সবার উচিত নিজ নিজ জায়গা থেকে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানো।”
স/এমএস
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়