বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ চৈত্র ১৪ ১৪৩০ ১৮ রমজান ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারি ২০২০
অনেক সময় সরকারি জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গিয়ে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয় প্রশাসনকে। অভিযানে গিয়ে অনেক সময় দখলদারদের বাধার মুখে ফিরেও আসতে হয়। তবে এবার ব্যতিক্রম ঘটেছে পাবনা বেড়া-সাঁথিয়ার কাকেশ্বরী নদী খনন ও দখলমুক্ত কার্যক্রমে। বেড়া পাউবাে গত ১০ জানুয়ারি নােটিশ এবং মাইকিং করে জানিয়ে দেন ১৭ জানুয়ারির মধ্যে কাকেশ্বরী নদীর দুই পাড়ের অবৈধ স্থাপনা নিজ নিজ দায়িত্বে সরিয়ে নেয়ার কথা। অন্যথায় নির্ধারিত সময়ে সরিয়ে না নিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানানাে হয় মাইকিং এ।
এরই প্রেক্ষিতে দখলদাররা নিজ নিজ দায়িত্বে নিজেরাই দোকান, বসত ঘর ভেঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে জায়গা খালি করে দিচ্ছে। এসব অবৈধ স্থাপনার মধ্যে রয়েছে পাকাবাধা ভবনসহ শত শত সেমিপাকা ঘর। উচ্ছেদ বার্তা দিয়ে ৭ দিন সময় বেঁধে দেয় পানি উন্নয়ন বাের্ড। বেড়া পাউবাে সুত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ ৬৪ জেলার অভ্যন্তরস্থ ছােট নদী, খাল এবং জলাশয় পুনঃ খনন (১ম পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সাঁথিয়া উপজেলার ডি-৩ সুতিখালি ও ডি-২ কাকেশ্বরী নদীর পুনঃ খনন কাজের উদ্বোধন করা হয় ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে। কাকেশ্বরী নদীর খনন কাজ সাঁথিয়ার উপজেলার সাতআনি ব্রীজ থেকে বেড়া উপজেলার কৈটলা সুইস গেট পর্যন্ত সাড়ে ১৯ কিঃ মিঃ নদী পুনঃখনন করা হবে। এই কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা। গতবছর বর্ষার আগ মুহুর্তে খনন কাজ কিছুটা করা হয়। পরবর্তি কাজ এবছর আবার শুরু করা হবে।
সরেজমিনে বেড়া-সাঁথিয়ার দুই উপজেলার আড়া শামুকজানী, পুরিয়া, চাকলা, পাঁচুরিয়া, কৈটলা গ্রাম ঘুরে দেখা যায় কাকেশ্বরী নদীর দুই পাড় দখল করে কালে নালে গড়ে উঠছিল হাজার খানেক ব্যবসা প্রতিষ্টান ও বসতবাতু। উচ্ছেদের কথা জানতে পেরে অসহায় ভুমিহিন দরিদ্র মানুষেরা তাদের বসত ঘড় ভেঙ্গে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছেন। এ সকল বাড়িতে থাকা বিভিন্ন ধরনের গাছ বিক্রি করে দিচ্ছেন পানির দরে।
জানা যায়, নদীর দুই পাড়ে বসতি বেশির ভাগ মানুষের নিজস্ব কোন জায়গা জমি নেই। সাঁথিয়ার আফড়া গ্রামের শাজাহান আলী জানান, আমরা জানি আমাদের ঘর ভাংগা থেকে রক্ষা পাবে না। তাই নিজেদের ঘড় নিজেরা আগেই ভেঙ্গে নিয়ে যাচ্ছি। নিজেরা ঘর খুলে নিলে আবার ব্যবহার করতে পারবাে ড্রেজার লাগালে তাে ঘরের কিছু থাকে না। সাঁথিয়া পুড়ুরিয়া গ্রামের শ্রী নিমাই চন্দ্র কর্মকার নদীর পাড়ে একতলা বিশিষ্ট ভবন। | নির্মাণ করে দীর্ঘদিন বসতি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছেন।
উচ্ছেদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি আমার নিজের ব্যাক্তিগত জায়গায় বসবাস করছি। এটা আমার কেনা জায়গা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান, তারা তাদের দাদার আমল থেকে এখানেই বসত করে আসছে। তারা বলেন, আমরা কিভাবে বুঝতে পারবাে কতটুকু পানি উন্নয়নের জায়গা কতটুকু আমাদের জায়গা। পানি উন্নয়ন বাের্ড তাদের জায়গা বুঝে। নিয়ে আমাদের সিমানা নির্ধারণ করে দিলে ভাল হয়।
বেড়া পাউবাে নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশ ৬৪ জেলার অভ্যন্তরস্থ ছােট নদী, খাল এবং জলাশয় পুনঃ খনন (১ম পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ডি-২ কাকেশ্বরী নদীর পুনঃ খনন করে নদীর দুই পাড় দিয়ে মাটি ফেলে রাস্তা বেধে দেওয়া হবে। আর এই রাস্তা নির্মাণে এই অবৈধ্য স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য মাইকিং এবং নােটিশ দেওয়া হয়েছে। অনেকেই তাদের স্থাপনা সরিয়ে নিয়েছে আর যারা সরায়নি তাদের স্থাপনাগুলাে মােবাইলকোর্ট পরিচালনা করে দ্রুতই উচ্ছেদ করা হবে। ইতিপুর্বেই নদীর সিমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান বেড়া পাউবাে নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ।
এন/কে
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়