বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১১ ১৪৩১ ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০২০
পিসিআর ল্যাব স্থাপনে ব্যর্থতাসহ নানা অনিয়ম ও স্বাস্থ্যসেবায় চরম অবহেলার কারণে আলোচিত পাবনার সেই সিভিল সার্জন ডা. মেহেদী ইকবালকে অবশেষে বদলি করা হয়েছে। তাকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (চলতি দায়িত্বে) পদে বদলি করা হয়। গত সোমবার বিকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা পরিদফতরের উপ-সচিব শারমিন আখতার জাহান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ বদলির আদেশ দেয়া হয়।
স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে চরম ব্যর্থতার কারণে সিভিল সার্জন মেহেদী ইকবালের ওপর জেলাবাসী ক্ষুব্ধ ছিল। সর্বশেষ তিনি গত ২৯ অক্টোবর স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে নতুন করে আলোচনায় আসেন। সাংবাদিকরা পাবনা থেকে তার প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এ বিষয়ে যুগান্তরে খবর ছাপা হলে স্বাস্থ্য বিভাগে তোলপাড় হয়।
এদিকে মঙ্গলবার রাতে তার বদলির বিষয়টি জানাজানি হলে সব মহলে স্বস্তি ফিরে আসে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, গত ২৯ অক্টোবর স্বাস্থ্য মহাপরিচালক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম পাবনার সিভিল সার্জন অফিস, পাবনা মেডিকেল কলেজ, পাবনা মানসিক হাসপাতাল, পাবনা টিবি ক্লিনিক ও ২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন।
এ উপলক্ষে ওই দিন সকালে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাসহ সুধীজনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ডিজি। এ সভায় সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু সভা চলাকালে পাবনার সিভিল সার্জন ডিজির উপস্থিতিতে আকস্মিকভাবে সাংবাদিক এবং ক্যামেরাপারসনদের সভাকক্ষ থেকে বের করে দেন। এ ঘটনায় উপস্থিত সবাই হতভম্ব হয়ে পড়েন।
সাংবাদিকরা জানান, পাবনায় স্বাস্থ্য বিভাগের সীমাহীন অনিয়ম, দুর্নীতি ও ব্যর্থতা ঢাকতে সাংবাদিকদের স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের মুখোমুখি হতে দেননি সিভিল সার্জন। এদিকে সভা থেকে সাংবাদিকদের বের করে দেয়া এবং অশোভন আচরণের প্রতিবাদে স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের সব কর্মসূচি বয়কট করেন পাবনার সাংবাদিকরা।
এছাড়া পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মেহেদী ইকবালকে অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানান সাংবাদিকরা। পাবনা জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় বক্তারা পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মেহেদী ইকবালকে তিরস্কার করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৭ জেলার পুরোনো জেলা পাবনা। সিভিল সার্জনের অযোগ্যতা ও ব্যর্থতায় এই জেলায় এখন পর্যন্ত পিসিআর ল্যাব বা কোভিড টেস্টের কোনো ব্যবস্থা হয়নি। জেলার ৯টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনো চিকিৎসার পরিবেশ নেই। এছাড়া নানা ধরনের অনিয়ম ও দুনীর্তিতে ডুবে গেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। নিজেদের অনিয়ম, দুনীতি ও ব্যর্থতা ঢাকতে সাংবাদিকদের ডিজির মুখোমুখি হতে দেয়নি সিভিল সার্জন।
জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. কেএম আবু জাফর সিভিল সার্জনের বদলির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সদ্য বদলিকৃত সিভিল সার্জন মেহেদী ইকবালকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (চলতি দায়িত্বে) বদলি করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাবনার সাবেক এক সিভিল সার্জন বলেন, তার পদাবনতি হয়েছে। সিভিল সার্জন এবং সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) পদের অনেক তফাৎ। তাই এটি এক হিসেবে শাস্তিমূলক বদলি।
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়