শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ৬ ১৪৩১ ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০
পাবনার কাশীনাথপুরে (সাঁথিয়া, সুজানগর ও বেড়া উপজেলার সংযোগস্থল) মহাসড়কের পাশে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের ১৯ শতাংশ সম্পত্তি ব্যক্তির নামে লিজ নেওয়ার চেষ্টা চলছে। এ সম্পত্তির মূল্য প্রায় ৭ কোটি টাকা। সম্পত্তিটি রেকর্ডীয় ভুলে ১ নম্বর খতিয়ানভুক্ত হয়ে গেছে। সেটি সংশোধন করে ফিরে পাওয়ার জন্য সওজ মামলা করেছে।
তবে জমিটি লিজ নিতে আগ্রহী এক ব্যক্তি মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য সওজ পাবনা জেলা অফিসে তদবির চালাচ্ছেন। তিনি সেখানে হাঁস-মুরগির খামার করতে চান বলে পাবনা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করে রেখেছেন। আর তা করা হলে সওজ হারাবে ৭ কোটি টাকার সম্পত্তি আর জনগণ হারাবে চলাচলের পথ ও পানি নিষ্কাশনের জায়গা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নগরবাড়ী-বগুড়া এবং নগরবাড়ী-পাবনা মহাসড়কের মধ্যবর্তী অংশের ২৪ শতাংশ সম্পত্তি সওজের। যার এলএ কেস নং ১৭/৫৮-৫৯। এ জমির বেশিরভাগ অংশ এখনো জনচলাচলে, মালামাল পরিবহনে ও মহাসড়কের পানি নিষ্কাশনে ব্যবহৃত হচ্ছে। আরএস রেকর্ডের সময় এ সম্পত্তির ১৯ শতাংশ ভুলক্রমে ১ নম্বর খাস খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। রেকর্ডীয় ভুল নিষ্পত্তির জন্য এবং এই মূল্যবান সম্পত্তি ২ নম্বর খতিয়ানভুক্ত করে জমি পুনরুদ্ধারে ২০১১ সালে সওজ কর্তৃপক্ষ পাবনার দ্বিতীয় যুগ্ম জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। এর পর আদালত ২০১১ সালের ২৮ নভেম্বর স্থিতাবস্থার আদেশ দেন। মামলার নথিপত্র দেখে ও সরকারি সংশ্লিষ্ট অফিসের তদন্ত প্রতিবেদন দেখে কয়েকজন আইনজীবী জানান, মামলার মেরিট অনুযায়ী রায় সওজের অনুক‚লে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাঁথিয়া উপজেলা ভূমি অফিস থেকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ২০১১ সালের ২২ ডিসেম্বর পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) কাছে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন।
তাতে উল্লেখ করা হয়, ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিভাগ সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৃত সম্পত্তি সরকারের নামে রেকর্ড হওয়া রেকর্ডীয় ভুল বলে প্রতীয়মান হয়।
এ ছাড়া উল্লেখ করা হয়, ওই জমি আরএস রেকর্ডে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নামে রেকর্ড হওয়ার কথা থাকলেও সড়ক ও জনপথ বিভাগের যথাযথ তদারকির অভাবে সরকারের এক নম্বর খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত হয়।
সে সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) তার চূড়ান্ত মতামতে উল্লেখ করেন, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার প্রতিবেদন দৃষ্টে দেখা যায়, ‘নালিশি ভূমি ১৭/৫৮-৫৯ নম্বর এলএ কেসের মাধ্যমে অধিগ্রহণকৃত সম্পত্তি সড়ক ও জনপথ বিভাগপ্রাপ্ত হয় এবং ওই জমি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নিয়ন্ত্রণে আছে, সেহেতু সড়ক ও জনপথ বিভাগের স্বার্থ নিহিত আছে বলে প্রতীয়মান হয়।
সওজের একটি সূত্র জানায়, সওজের এই জায়গাটুকু সড়ক বিভাগের ল্যান্ড অ্যাকুইজিশনের ভেতরে রয়েছে। আবার মহাসড়ক যখন চার লেন করা হবে, তখন সম্প্রসারণ কাজে এ জায়গার বেশিরভাগ প্রয়োজন হবে। এ ছাড়া কাশীনাথপুর মোড় এলাকার রাস্তায় জমা পানি এই জায়গা দিয়েই পাশের আত্রাই নদীতে নিষ্কাশিত হয়।
এ ব্যাপারে সওজ পাবনা নির্বাহী প্রকৌশলী সমীরণ রায়কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান, জমিজমা সম্বন্ধে তিনি খুব ভালো বোঝেন না। কাগজপত্র দেখা ছাড়া এই সম্পত্তির মামলার অবস্থা সম্বন্ধেও কিছু বলতে পারবেন না। তবে সওজের স্বার্থবিরোধী কোনো কাজ তিনি করবেন না। মামলা তুলে নেওয়ার কোনো চেষ্টাও তিনি করছেন না। সওজের এই মূল্যবান সম্পত্তিটি তাদের হাতছাড়া হোক তা তিনি চান না বলে জানান। এ ছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষর অনুমতি ছাড়া তিনি মামলা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। এমনকি মামলায় হেরে গেলেও বিধি মোতাবেক আপিল করা হবে বলে তিনি জানান।
স/এমএস
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়