মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১০ ১৪৩১ ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ১৯ জুন ২০২১
করোনা মহামারি সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষের আয়ের উপর প্রভাব পড়েছে। তাদের আয় আগের চেয়ে তুলনামূলক ভাবে কমেছে। কিন্তু জীবনের মৌলিক চাহিদা তো আর থেমে থাকে না।
তাই স্বল্প আয়ের মানুষ মহাজনদের নিকট থেকে চড়া সুদের ওপর টাকা নিয়েও তাদের নিত্য প্রয়োজন মিটিয়ে চলেছে। আর এই সুযোগ গ্রহণ করছে এক শ্রেণির সুদের কারবারী মহাজন শ্রেণির মানুষ। তাদের প্রলোভনে পড়ে একবার সুদে টাকা গ্রহণ করলে বছরের পর বছর সুদের টাকা দিলেও মূল টাকা থেকেই যায়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার পৌর সদর থেকে শুরু করে বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকাতেও রেজিষ্ট্রেশন বিহীন কতিপয় ব্যক্তি মিলে বাহারী নামে বা আকর্ষনীয় নামাঙ্কিত করে সমিতির অন্তরালে চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের সুদের ব্যবসা।
আবার কখনো কখনো সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তি নিজ উদ্যোগে এই ব্যবসা করে আসছে। তারা পরিপাটি পোশাকে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ফিরে অভাবী মানুষকে প্রলুব্ধ করে সুদে টাকা প্রদান করে থাকে।
আবার কোন কোন সময় অভাবী মানুষ তাদের নিজ প্রয়োজন মেটাতে না বুঝেও এই ধরণের সুদে টাকা গ্রহণ করে থাকে। সুদে টাকা অসহায় ব্যক্তিদেরকে প্রদানের সময় মহাজন শ্রেণির মানুষ কৌশলে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে নেয়। এক্ষেত্রে ওই স্ট্যাম্পের টাকাও কেটে রেখে অবশিষ্ট টাকা দিয়ে দেয়।
কিন্তু সুদ পুরো টাকার ওপরই চলতে থাকে। এভাবে প্রতি হাজারে মাসে ১শত থেকে ৪শত টাকা পর্যন্ত সুদ গুণতে হচ্ছে তাদের। এই সুদের টাকা গ্রহণে নেই কোনো বই বা প্রমান পত্র।
এভাবে কেউ যদি একবার এই সুদে টাকা গ্রহণ করলে মুল টাকার দ্বিগুণ, তিনগুণ পরিশোধ করলেও মুল টাকা অপরিবর্তিত অবস্থায় থেকে যায়। টাকা গ্রহীতা এই সুদে টাকা পরিশোধ না করলে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরিত কাগজের বলে মহাজন তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে টাকা তুলতেও পিছপা হন না। সুদের কারবারিরা দলবদ্ধভাবে বা কখনো স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থাকে বলে সুদের টাকা না দিলে সাধারণ জনগণকে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করলেও তার কোনো প্রতিকার হয় না।
এভাবে সুদে টাকা গ্রহীতাদের পরিবারে পারিবারিক কলহ ও অশান্তি দিন দিন বাড়ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌর এলাকার সারুটিয়া মহল্লার বাসিন্দা সুদে টাকা গ্রহীতা বলেন, স্ট্যাম্পের উপর স্বাক্ষর করে ৩০ হাজার টাকা গ্রহণ করে এক বছর ধরে প্রতিমাসে ৩ হাজার টাকা করে দিয়েও মূল টাকা ধরাই রয়েছে।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা মনে করেন, এই অবৈধ সুদী মহাজনদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। তাছাড়া ধর্মীয় অনুশাসনে গুরুত্বারোপ, ব্যক্তি ও পারিবারিক সচেতনতার পাশাপাশি সঞ্চয়ের মনোভাব গড়ে তুলেতে পারলে সমাজ থেকে এই ধরণের সমস্যা দূর করা সম্ভব।
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়