শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ৫ ১৪৩১ ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ২৫ মে ২০২১
তীব্র দাবদাহে লিচুর রাজধানী বলে খ্যাত ঈশ্বরদীর লিচু বাগানে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। এদিকে ঝড়-বৃষ্টির আশংকায় বাগান মালিক ও লিচু চাষীরা দ্রুততর সময়ের মধ্যে গাছ থেকে লিচু ভেঙ্গে বাজারজাত করতে চাইলেও শ্রমিক সংকটের কারণে সম্ভব হচ্ছে না। সোমবার সরেজমিনে লিচু বাগান ঘুরে চাষিী ও কৃষি কর্মকর্তার সাথে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, ঈশ্বরদীতে প্রায় পাঁচ শতাধিক হেক্টর জমিতে লিচু বাগান রয়েছে। লিচু মৌসুমে বহিরাগত এবং এলাকার নারী ও পুরুষ সকলেই মৌসুমি শ্রমিক হিসেবে বাগানে কাজ করে। এমনকি স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা গ্রীস্মকালীন ছুটিতে বাগানে গাছ থেকে লিচু ভাঙ্গা এবং ৫০টির আাঁটি বাঁধার কাজ করে। তিন-থেকে চার ঘন্টা কাজ করলে ৩০০-৪০০ টাকা মজুরি পাওয়া যায়। তাই এলাকার ছেলে, বৌ, মেয়ে সকলেই লিচু মৌসুমে বাগানের কাজে এক্সট্টা উপার্জনে নেমে পড়ে। বাগানে কাজ করতে এলাকার লোকজনের লজ্জাবোধ নেই। লিচু মৌসুমে বাগানে কাজ করা এলাকায় প্রথা হয়ে গেছে। কিন্তু এবারের তীব্র দাবদাহে এই প্রথার ব্যত্যয় ঘটেছে। গত কয়েকদিন ধরে এখানকার তাপমাত্রা ৩৭-৩৯ ডিগ্রী সেলসিয়াসে উঠানামা করছে। প্রখর রৌদ্রতাপে আগুনের হল্কার মতো লাগছে শরীরে। আবহাওয়া অফিস বলছে, চলমান মাঝারি তাপ প্রবাহের সাথে সাথে বাতাসে জলীয় বাস্পের পরিমাণ বেশী থাকায় গড়ম বেশী। এই অবস্থায় ৩-৫ ঘন্টা কাজের জন্য ৫০০ টাকা মজুরিতেও মৌসুমি শ্রমিক মিলছে না। লকডাউনে দূরপাল্লার পরিবহণ বন্ধ থাকায় বাইরে থেকেও শ্রমিক আসতে পারেনি। গুটি না আসায় এবারে এমনিতেই বোম্বাই লিচুর ফলন অর্ধেকেরও অনেক নীচে নেমে এসেছে। এরই মধ্যে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে। ঝড়-বৃষ্টি হলে লিচু চাষীদের চরম বিপর্যয় ঘটবে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
সলিমপুরের লিচু চাষী শাহমত মন্ডলের লিচু বাগানে সোমবার গিয়ে দেখা যায়, নারী-পুরুষ মিলিয়ে মাত্র ৭-৮ জন মৌসুমি শ্রমিক কাজ করছে। শাহমত জানান, এসময় আমার বাগানে অন্তত ৫০-৬০ জন শ্রমিকের কাজ করার কথা। বাইরে থেকে শ্রমিক আসতে পারেনি। গড়মের কারণে মাত্র কয়েকঘন্টা কাজের জন্য ৫০০ টাকা মজুরিতেও এলাকার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে নিম্নচাপের প্রভাব সৃষ্টি হয়েছে। ঝড়-বৃষ্টি আসার আগেই লিচু ভাংতে চাইছি। কিন্তু চেষ্টা করেও পারছি না। ঝড়ে লিচুর ডাল ভেঙ্গে পড়ার আশংকা রয়েছে। এরই সাথে বৃষ্টি হলে লিচুর বোটায় পোকা জন্মাবে। তখন লিচু চাষিদের পথে দাঁড়ানো ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না বলে জানান তিনি।
উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল লতিফ জানান, নিয়মিত ও মৌসুমী প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক লিচু মৌসুমে বাগানে কাজ করে। লকডাউনের কারণে বাইরে থেকে যেমন শ্রমিক আসতে পারেনি, তেমনি এলাকার নারী-পুরুষ-ছাত্র কেউই তীব্র গড়মে বাগানে কাজ করতে রাজী না হওয়ায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়