মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১০ ১৪৩১ ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ২৯ আগস্ট ২০২০
পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘোরিয়া) আসনের আসন্ন উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে দলীয় মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করলেও ডা. সাহেদ ইমরানের নিকট নির্বাচনে অংশগ্রহণের চেয়ে করোনাযুদ্ধে সামিল থাকাটাই এখন জরুরি বলে মনে হয়েছে।
বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি পেশাজীবীদের পক্ষে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। এবার এই আসনের উপনির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পরও তিনি নির্বাচনী মাঠ ছেড়ে করোনারোগিদের পাশে রয়েছেন দিনরাত।
বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান ডা. সাহেদ ইমরান। ঈশ্বরদীর পাকশীতে জন্মগ্রহণ করা সাহেদের বাবা-মা দুজনই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক।
তারা একমাত্র সন্তানকে এখনো শিশুর মত আগলে রাখতে চান, কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণের এই বৈশ্বিক দুর্যোগে তাদের আদরের সন্তানটি যে করোনাযুদ্ধে নিজেকে সঁপে দিয়েছেন তাতে এক-দু সপ্তাহ পরপর বাড়ি আসাতো দূরে থাক দু’তিন মাসেও বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা মেলে না ছেলের।
একান্তে ডা. সাহেদ ইমরানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার কাজ শেষ করে বর্তমানে ঢাকার মাতুয়াইল মা ও শিশু হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত মানুষের সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজার করোনা আক্রান্ত রোগির চিকিৎসা সেবা দিয়ে তিনি সুস্থ করে তুলেছেন।
ডা. সাহেদ মনে করেন এই জাতীয় দুর্যোগে সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসেবে নিজেকে সামিল রাখতে পারাটা এখন খুবই জরুরি। সাধারণ রোগির চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি করোনা আক্রান্ত রোগিদের বিশেষ চিকিৎসা সেবা প্রদান করে এই চিকিৎসক ইতোমধ্যে ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছেন। ডা. সাহেদ ইমরান বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের এই বৈশ্বিক দুর্যোগে করোনা রোগীদের সেবা প্রদান করাটাই এখন প্রধান দায়িত্ব হিসেবে পালন করতে হচ্ছে।
করোনা রোগিদের চিকিৎসা প্রদান করতে নিজের জীবনের ঝুঁকি জেনেও করোনা আক্রান্ত মানুষের চিকিৎসা করার বিষয়ে তিনি বলেন, চিকিৎসক হিসেবে প্রথম দায়িত্ব রোগির সেবা করা।
জাতীয় দুর্যোগ হিসেবে করোনাভাইরাস সংক্রমণের এই দুঃসময়ে চিকিৎসক হিসেবে নিজের জীবনের চেয়ে রোগির জীবনের মূল্য আমার নিকট অনেক বেশি। অজানা অচেনা শত্রু হিসেবে করোনা আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে।
এই মহামারিতে চিকিৎসকের জীবনের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। তা জেনেও দেশের চিকিৎসকরা জীবনবাজি রেখে প্রতিনিয়ত করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করে চলেছেন।
এই যুদ্ধে ইতোমধ্যে শতাধিক চিকিৎসক অকালে মৃত্যুবরণও করেছেন। ডা. সাহেদ বলেন, করোনার এই কালে আমাদের মনে রাখতে হবে করোনা আমাদের জীবনে থেকেই যাচ্ছে। এখন নব স্বাভাবিকত্ব অথবা ‘নিউ নরমাল লাইফ’ মেনে নিয়েই আমাদের জীবন পরিচালিত করতে হবে। আমাদের নতুন স্বাভাবিক জীবন চালিত করতে হবে। তাই নিজেকেই করোনা থেকে সুরক্ষিত রেখে চলার কোন বিকল্প নেই।
বিগত সময়ের কথা উল্লেখ করে ডা. সাহেদ বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একজন পেশাজীবী সংগঠক হিসেবে আওয়ামীলীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলাম।
ইচ্ছা ছিল সংসদ সদস্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার। পেশাদার মানুষ হিসেবে মানুষের সেবা করার প্রবল ইচ্ছা থেকেই এমন ভাবনার আশা পোষণ করি। কিন্তু সেই পেশাদারিত্বের কারণেই এবার পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘোরিয়া) এর আসন্ন উপ-নির্বাচনের ডামাডোলের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের এই মহামারির সময়ে আমার কাছে মনে হয়েছে নির্বাচনে অংশগ্রহণের চেয়ে করোনাকালীন করোনা রোগির পাশে থাকাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
তাই নির্বাচনের দিকে খুব বেশি মনোযোগ না দিয়ে করোনাযুদ্ধে নিজেকে সঁপে দিয়েছি, মানুষকে সুস্থ করে তোলার মধ্যেই আমি আনন্দ পাচ্ছি, এই সুযোগ ক’জনের ভাগ্যে জোটে।
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়