শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১৩ ১৪৩১ ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ১১ জানুয়ারি ২০১৯
২০১৮ সালে চীনে স্মার্টফোনের সরবরাহ ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ কমে ৩৯ কোটি ইউনিটে দাঁড়িয়েছে। দেশটির শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত সায়েন্টিফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট ‘চায়না একাডেমি অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স টেকনোলজি (সিএআইসিটি)’ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। খবর রয়টার্স।
বৈশ্বিক মোবাইল ডিভাইস বাজারে চীনা ব্র্যান্ডগুলোর অংশীদারিত্ব বাড়ছে। হুয়াওয়ে, অপো, শাওমি ও ভিভোর মতো ডিভাইস নির্মাতাদের কারণে বিশ্ববাজারে তীব্র প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে স্যামসাং ও অ্যাপল। চুক্তিভিত্তিক মোবাইল ডিভাইস উৎপাদনের হাব হয়ে ওঠা দেশটিতে স্মার্টফোনের সরবরাহ কমার জন্য যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধকে দায়ী করা হচ্ছে।
বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যানালিস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত বছর চীনে স্মার্টফোন সরবরাহ ১২ শতাংশ কমেছে এবং চলতি বছর দেশটিতে স্মার্টফোনের সরবরাহ কমে ৪০ কোটি ইউনিটের নিচে দাঁড়াতে পারে। বাস্তবে এমন হলে ২০১৪ সালের পর প্রথমবার চীনে স্মার্টফোন সরবরাহে বড় ধরনের পতন দেখা যাবে।
ক্যানালিসের তথ্যমতে, বিশ্বের বৃহৎ স্মার্টফোন বাজার চীন। চলতি বছর দেশটিতে স্মার্টফোন সরবরাহ ৩ শতাংশ কমতে পারে। ২০১৭ সালে চীনে স্মার্টফোন সরবরাহ কমেছে ৪ শতাংশ। এ নিয়ে টানা তিন বছর ধরেই দেশটিতে স্মার্টফোন সরবরাহ কমছে।
গত সপ্তাহে চীনে আইফোনের বিক্রি উল্লেখযোগ্য কমার তথ্য জানিয়েছে অ্যাপল। যে কারণে ডিসেম্বরে সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের বিক্রি ও রাজস্ব পূর্বাভাস কমিয়েছে মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি। বিশ্বের উন্নত বাজারগুলোতেও আইফোনের চাহিদা ক্রমান্বয়ে কমছে। চীনে আইফোন বিক্রি কমার জন্য দেশটির অর্থনীতির দুর্বল অবস্থা এবং যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধকে দায়ী করা হয়। দেশটিতে স্মার্টফোন সরবরাহ কমার প্রভাব মুক্ত নয় দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক স্যামসাং। এরই মধ্যে চতুর্থ প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর) আয় ২৯ শতাংশ কমার পূর্বাভাস দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
সিঙ্গাপুরভিত্তিক ক্যানালিসের বিশ্লেষক তুয়ানআন নিগুয়েন বলেন, চীন এখন স্মার্টফোন ডিভাইসের পরিণত বাজার। দেশটিতে স্মার্টফোন ডিভাইসের লাইফ সাইকেলে পরিবর্তন এসেছে। ব্যবহারকারীরা দীর্ঘ সময় ধরে একই হ্যান্ডসেট ব্যবহার করছেন। যে কারণে টানা কয়েক বছর ধরেই দেশটিতে স্মার্টফোন সরবরাহ কমছে।
তিনি বলেন, চীনের দুর্বল অর্থনৈতিক অবস্থা এবং নিম্ন ভোক্তা আস্থার কারণে চলতি বছরের প্রথমার্ধে বৈশ্বিক প্রিমিয়াম স্মার্টফোন বাজারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এর ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে অ্যাপল। বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে বরাবরই প্রিমিয়াম হ্যান্ডসেট সরবরাহের মাধ্যমে ব্যবসা করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। অন্যদিকে চীনা প্রতিদ্বন্দ্বীরা তুলনামূলক সাশ্রয়ী ডিভাইস সরবরাহের মাধ্যমে ব্যবসা জোরদার করছে।
সিএআইসিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে চীনে স্মার্টফোনের সরবরাহ ৩৭ কোটি ৯০ লাখ ইউনিটে দাঁড়িয়েছে, যা গত বছরের প্রথম ১১ মাসের চেয়ে ১৫ দশমিক ৬ শতাংশ কম। গত নভেম্বরে চীনে ফোরজি মোবাইল ফোনের সরবরাহ ৩ কোটি ৩৫ লাখ ৮০ হাজার ইউনিটে দাঁড়িয়েছে, যা এক বছর আগের চেয়ে ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ কম। গত নভেম্বরে দেশটিতে মোট যত ইউনিট স্মার্টফোন সরবরাহ হয়েছে, তার ৯৪ দশমিক ৯ শতাংশই ছিল চতুর্থ প্রজন্মের নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি ফোরজি সমর্থিত।
আধিপত্য বিস্তারে চীনা ব্র্যান্ডগুলো সাশ্রয়ী ও খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে একাধিক মডেল উন্মোচনে জোর দিয়ে আসছে। অর্থাৎ স্যামসাং ও অ্যাপলের মতো ব্র্যান্ডগুলো বছরে সর্বনিম্ন তিনটি থেকে সর্বোচ্চ অর্ধডজন ডিভাইস উন্মোচন করলেও চীনা কোম্পানিগুলো প্রতি বছর ডজনের বেশি মডেল উন্মোচন করছে। তা সত্ত্বেও দেশটিতে স্মার্টফোনের সরবরাহ কমাকে নেতিবাচক মনে করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের তথ্যমতে, ২০১৭ সালের মার্চ থেকে চীনে স্মার্টফোনের সরবরাহ কমতে শুরু করে। দেশটির স্মার্টফোন বাজারে পরিবর্তন আসতে পারে। কারণ প্রত্যেক চীনা নাগরিকের কাছে অন্তত একটি করে স্মার্টফোন রয়েছে। যে কারণে তাদের মধ্যে স্মার্টফোন ক্রয়ের প্রবণতা ক্রমান্বয়ে কমছে।
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়