মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১০ ১৪৩১ ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ২ মার্চ ২০২০
পাবনার চাটমোহর উপজেলার জাবরকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষ সংকটের কারণে সিঁড়ি ও বারান্দায় চলছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান। মাত্র দু’টি কক্ষে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান দিতে গিয়ে হিমসিম খেতে হচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষকে। রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে এভাবেই পাঠগ্রহণ করছে শিশু শিক্ষার্থীরা। এতে মাঝে মধ্যে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। একটি নতুন ভবন নির্মাণের জন্য বার বার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেও কোনো প্রতিকার মেলেনি। এ কারণে স্কুলের অদূরে গজিয়ে ওঠা কিন্ডার গার্ডেন স্কুলে ছেলে-মেয়েদের ভর্তি করেছেন অনেক অভিভাবক।
সরেজিমনে স্কুলটিতে গিয়ে জানা যায়, ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রাচীন এ বিদ্যালয়টিতে ১৯৯৪ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) তিন কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করে। তবে কাজ নিম্মমানের হওয়ায় অল্প সময়ের মধ্যে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। পরে ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর ২০১১-১২ অর্থবছরে পাশেই একটি তিন কক্ষ বিশিষ্ট আরেকটি নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়। এরমধ্যে একটি কক্ষ অফিস হিসেবে ব্যবহার হয়। আর অবশিষ্ট দু’টি কক্ষে ওই স্কুলের প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীকে দুই শিফটে পাঠদান করানো হয়। শ্রেণীকক্ষ সংকটের কারণে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকে বারান্দায় ও সিঁড়ি ঘরে বসে পাঠদান করানো হয়।
এদিকে বারান্দায় বসে রোদের মধ্যে কষ্ট করে পড়ালেখা করতে গিয়ে অনেক শিশুই মাঝে মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। আর বৃষ্টি এলে পানির ঝাপটায় বই খাতা গুছিয়ে একটি ঘরের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় শিক্ষার্থীদের। এতে ওই স্কুলটিতে শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকায় প্রতিবছর ওই স্কুলের শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে। এছাড়া সীমানা প্রাচীর না থাকায় ওই স্কুলের সামনে দিয়ে চলে যাওয়া চাটমোহর-মান্নাননগর সড়ক পাড় হতে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থী দূর্ঘটনার শিকার হয়ে থাকেন। এ কারণে অনেক অভিভাবক মাঝে মধ্যেই সন্তানদের স্কুলেও পাঠান না।
আবদুল হালিম, জয়নব বেগমসহ বেশ কয়েকজন অভিভাবক বলেন, ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠিয়ে দুঃশ্চিন্তায় থাকতে হয় সীমানা প্রাচীর না থাকায়। কখন না জানি দূর্ঘটনা ঘটে। আবার শ্রেণীকক্ষ সংকটের কারণে বারান্দা বা সিঁড়ি ঘরে পড়াশোনা করানো হয়। এতে তাদের (শিক্ষার্থী) পড়াশোনার ব্যাঘাত হয়। তাই স্কুলটিতে একটি নতুন ভবনের খুব প্রয়োজন।
প্রধান শিক্ষক রেজিনা সুলতানা বলেন, শ্রেণীকক্ষ সংকটের কারণে তো স্কুল থেকে অনেক শিক্ষার্থী অন্যত্র চলে গেছে। একটি নতুন ভবনের জন্য বার বার শিক্ষা অফিসে আবেদন করেও কোন ফল মেলেনি। আর গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক স্কুলের সামনে দিয়ে যাওয়ায় সত্যিই ছোট ছোট শিশুদের নিয়ে চিন্তার মধ্যে থাকতে হয় বলে জানান তিনি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আশরাফুল ইসলাম বলেন, স্কুলের শিক্ষার্থীরা অনেক কষ্টের মধ্যে আছে বলে জেনেছি। এরআগে নতুন ভবনের চাহিদা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু বরাদ্দ আসেনি। তবে নতুন করে আবার চাহিদা পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।
এন/কে
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়