শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ৫ ১৪৩১ ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ২৭ জানুয়ারি ২০২০
পাবনার চাটমোহরে গুমানী নদীতে অবৈধভাবে সৌঁতি বাঁধ স্থাপন করে কীটনাশক প্রয়োগে মাছ নিধনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে। কীটনাশকের প্রভাবে নদী জুড়ে দেশীয় প্রজাতির প্রচুর মরা মাছ মারা যায়। নদীর পানি বিষাক্ত হয়ে উঠেছে। চারিদিকে শুধু মরা মাছের গন্ধ। এ ঘটনায় নদীপাড়ের সাধারণ মানুষ ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে। অভিযুক্তদের শাস্তি চেয়ে স্থানীয়রা উপজেলা মৎস্য বিভাগে অভিযোগ দেন।
এরপর সোমবার দুপুরে মৎস্য বিভাগের লোকজন উপজেলার নটাবাড়িয়া এলাকায় স্থাপন করা অবৈধ সৌঁতিবাঁধ থেকে এলাকাবাসীদের সহযোগিতায় কয়েকশ’ মিটার জাল জব্দ করে। পরে স্থানীয়রা উপজেলা মৎস্য বিভাগের সামনে এসে মরা মাছ নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
সোমবার সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নদীতে পানি কমার সাথে সাথে অতিসম্প্রতি উপজেলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত গুমানী নদীর নটাবাড়িয়া এলাকায় স্রোত সৃষ্টি করে মাছ ধরার জন্য অবৈধ ভাবে সৌঁতিবাঁধ স্থাপন করে নটাবাড়িয়া গ্রামের প্রভাবশালী নুরু মোল্লা, বিদু মোল্লা ও রশিদ মোল্লা নামে তিন ব্যক্তি। কিন্তু মাছ কম হওয়ার কারণে তারা রাতের অন্ধকারে নদীতে কীটনাশক (বিষ) প্রয়োগ করে বিপুল পরিমাণ মাছ ধরে তা পাইকারী আড়তে বিক্রি করে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এ নিয়ে গ্রামবাসীদের সাথে অভিযুক্তদের বাকবিতন্ডাও হয়। পরে স্থানীয়রা রোববার উপজেলা মৎস্য বিভাগে ওই তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন।
এরপর সোমবার উপজেলা মৎস্য বিভাগের ক্ষেত্র সহকারী জয়নুল আবেদীন, রাজিবুল হাসানসহ কয়েকজন ঘটনাস্থলে তদন্ত করতে গিয়ে মাত্র কয়েকশ’ মিটার জাল জব্দ করে আনেন। পরে মরা মাছসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা মৎস্য অফিসের সামনে এসে বিক্ষোভ শুরু করেন স্থানীয়রা। এদিকে মৎস্য বিভাগ সংশ্লিষ্টদের সাথে অভিযুক্তদের সংশ্লিষ্টতা এবং তাদের অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এলাকাবাসী।
তাদের অভিযোগ, অভিযানের সময় ঘটনাস্থলে অবস্থান করছিল তিন অভিযুক্ত। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে এবং নদী থেকে বাঁশ অপসারণ না করে শুধু মাত্র লোক দেখানোর জন্য তারা জাল জব্দ করে উপজেলায় নিয়ে আসে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করেই নাকি অভিযুক্তরা এসব অপকর্ম করে থাকেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
ধানকুনিয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন নামে স্থানীয় এক মৎস্যজীবি অভিযোগ করে বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকে নদীতে আমরা মাছ মেরে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। কিন্তু এভাবে নদীতে বিষ প্রয়োগ করে মাছ মারায় আমাদের পেটে লাথি দেয়া হচ্ছে। আমরা অভিযুক্তদের বিচার চাই।
সুলতান মোল্লা নামে অপর আরেক জন বলেন, মৎস্য বিভাগের লোকজন যখন অভিযান চালায় তখন অভিযুক্তরা ঘটনাস্থলেই ছিল। কিন্তু তাদের কিছু না বলে শুধু জাল জব্দ করে নিয়ে যায়। আমরা এর ন্যায় বিচার চাই।
এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলে ফোন বন্ধ পাওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরকার মোহাম্মদ রায়হানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি জানা নেই। আমি খবর নিচ্ছি। তবে এ রকম হয়ে থাকলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
স/এমএমআই # পবিত্র তালুকদার চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি মোবাইল- ০১৭১৬১৬৪৪৬৭, ০১৭৫৯৫৪৫২৭৫ তাং- ২৭-০১-২০২০ ইং।
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়