শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ৭ ১৪৩১ ১১ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ১৫ এপ্রিল ২০২১
চলতি মৌসুমে পাবনার চাটমোহরে গরম বাতাসের কারণে বোরো ধানের শীষে অধিক চিটা হচ্ছে। এ কারণে চাটমোহরের অনেক কৃষক দুঃশ্চিন্তায় উদ্বীগ্ন হচ্ছেন। সবুজ ধানের খেত দেখে কৃষক যখন বাম্পার ফলনের আশা করছিলেন এমন সময় তাদের আশা হতাশায় পরিণত হচ্ছে। ধানের শীষ বের হবার পর পরই তা চিটায় পরিণত হচ্ছে এবং কালচে রঙ ধারণ করছে।
চাটমোহর কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ হাজার ৭শ হেক্টর। ১১ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় ৯ হাজার ৪শ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে।
গত বছর চাটমোহরে ৭ হাজার ৪শ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছিল। গত বছরের চেয়ে এ বছর ২ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে।
চাটমোহর উপজেলার গুনাইগাছা ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, এ বছরে আমি ৯ বিঘা জমিতে ব্রীধান-৫৮ জাতের বোরো ধান চাষ করেছি। এক সপ্তাহ পূর্বে ধানের শীষ বের হওয়া শুরু হয়। কিন্তু ধানের শীষ বের হবার পর দেখছি অগ্নিবায়ুর কারণে প্রায় ৫/৬ বিঘা জমির ধান চিটা।
পৌর সদরের আফ্রাতপাড়া মহল্লার বোরো চাষী আজমত আলী জানান, খাবার ধান ও গবাদী পশুর খাদ্যের যোগান দিতে সাড়ে ৫ বিঘা জমি লীজ নিয়ে ব্রীধান-৫৮ জাতের বোরো ধান চাষ করেছি। ধানও খুব ভাল হয়েছিল।
গত চার পাঁচদিন আগে ধানের শীষ বের হওয়া শুরু হয়। কিন্তু ধানের শীষ বের হবার পর দেখছি সব চিটা। ব্যুরো বাংলাদেশ নামক একটি বেসরকারী সংস্থা থেকে ৫০ হাজার এবং ইসলামী ব্যাংক থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে জমি লীজ নিয়েছি ও ধান চাষ করেছি। এখন কি করে ঋণ শোধ করবো আর কি করে পেটের ভাতের যোগান দেবো এ দুশ্চিন্তায় পরেছি।
একই মহল্লার বোরো ধান চাষী আলাল জানান, গ্রামীন ব্যাংক থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে মথুরাপুর ইউনিয়নের উথুলী মৌজায় তিন বিঘা জমি লীজ নিয়ে বোরো ধানের চাষ করেছি। সমস্ত জমির ধানই চিটা হয়ে গেছে। অপর বোরো চাষী মোজাম্মেল হক জানান, এক বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছি। এতে প্রায় দশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ধানের শীষ বের হচ্ছে কিন্তু ধানের শিষের অধিকাংশই চিটা।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ আল ইমরান জানান, চাটমোহরে সাধারণত উফশী জাতের ব্রীধান ২৮, ব্রীধান ২৯, ব্রীধান ৫৭, ব্রীধান ২৮ এবং হাইব্রিড জাতের পারটেক্স, তেজগোল্ড, এস এল-৮ ও ছক্কা জাতের বোরো ধান চাষ হয়ে থাকে।
মাঠের অবস্থা ভালই দেখা যাচ্ছিল। ধান ফোলার সময় কিছু জমির ধানে (শীষ বের হবার সময়) চিটার আধিক্য দেখা যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে অতিরিক্ত তাপমাত্রা ও গরম বাতাস প্রবাহিত হওয়ার কারণে কিছু জমির ধানের শীষে অধিক চিটা হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, গরম বাতাস প্রবাহিত হওয়ার কালে যে জমিগুলোর ধান ফুলে শীষ বের হচ্ছিল সে জমি গুলোতে এ সমস্যা দেখা যাচ্ছে। আমরা কৃষকদের প্রতি ৫ শতাংশ জমিতে ১০ লিটার পানির সাথে ১০০ গ্রাম পটাশ মিশিয়ে বিকেলে জমিতে স্প্রে করার নির্দেশনা দিচ্ছি।
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়