বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ৫ ১৪৩১ ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ৪ অক্টোবর ২০২০
অন্যের বাড়িতে অযন্ত অবহেলায় পড়ে থাকা প্রায় দুই কেজি ওজনের একটি ‘কষ্টিপাথর’ উদ্ধার করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে সততার অনন্য নজির স্থাপন করলেন স্বপ্না খাতুন নামে এক নারী।
গতকাল শনিবার দুপুরে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) সজীব শাহরীনের হাতে ‘কষ্টিপাথর’ তুলে দেন তিনি। স্বপ্না খাতুন পাবনার চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের গোলজার শেখের মেয়ে।
স্বপ্না খাতুন জানান, দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে একই গ্রামের সাজু হোসেনের স্ত্রী বেবী খাতুন একটি কালো পাথর শিল নোড়া হিসেবে ব্যবহার করছিলেন। পাথরটি কোনো স্বাভাবিক পাথর নয়, এমন ভেবে কৌতুহল হয় স্বপ্না খাতুনের।
তিনি এক হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলে বেবী খাতুনের কাছ থেকে ওই পাথর নিয়ে সরাসরি পৌর শহরের মির্জা মার্কেট এলাকায় রোজি কুটির শিল্প নামে একটি সোনার দোকান যান। সেখানে পরীক্ষা করে ওই সোনার দোকানি হাফিজুল ইসলাম পাথরটি মূল্যবান ‘কষ্টিপাথর’ বলে নিশ্চিত করেন।
কিন্তু ওই কথায় বিশ্বাস না হওয়ায় পুনরায় দোলবেদীতলা এলাকার রায় জুয়েলার্সের মালিক রনি রায়কে পাথরটি দেখান। সেখানে ওই পাথরের ওপর সোনা ঘষে এবং অ্যাসিড-ছাই দিয়ে পরীক্ষা করে পাথরটি ‘কষ্টিপাথর’ হিসেবে নিশ্চিত করা হয়।
এরপর তিনি মূল্যবান ওই পাথরটি এএসপি সজীব শাহরীনের হাতে তুলে দেন। এদিকে সততার দৃষ্টান্ত দেখানোয় স্থানীয়দের প্রশংসায় ভাসছেন স্বপ্না খাতুন।
স্বপ্না খাতুন বলেন, দেখেই মনে হয়েছিল পাথরটি মূল্যবান। পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়ার পর সেটি (কষ্টি পাথর) এএসপি স্যারের কাছে দিয়েছি।
সততার জন্য সরকারিভাবে পুরস্কৃত করা হলে নেবেন কিনা জানালে তিনি বলেন, ওই মহিলাকে (বেবী খাতুন) টাকা দিতে চেয়েছিলাম। আমি গরীব মানুষ। এখন টাকা দেবো কোথায় থেকে? তবে সরকারিভাবে সহযোগিতা করলে উপকৃত হতাম।
এ ব্যাপারে সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) সজীব শাহরীন বলেন, স্বপ্না খাতুন নামে ওই নারী এসে আমার কাছে একটি কালো পাথর দিয়েছেন। স্থানীয় স্বর্ণকাররা পাথরটি ‘কষ্টিপাথর’ বলেছেন বলে জেনেছি। পাথরটি থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। তবে সেটি কষ্টি পাথর কিনা সেটা পরবর্তীতে যাচাই করে নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে ওই নারীর উদ্দেশ্যে সৎ ছিল বলে জানান তিনি।
চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, স্বপ্না থাতুন নামে ওই নারী থানায় এসে একটি পাথর জমা দিয়েছেন। তবে সেটি সত্যিই কষ্টিপাথর কিনা পরীক্ষা করার জন্য প্রত্নতত্ত্ব দপ্তরে পাঠানো হবে। নিশ্চিত না হয়ে কোনো কিছু বলা সম্ভব না বলে জানান তিনি।
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়