শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১৩ ১৪৩১ ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ২৯ ডিসেম্বর ২০২০
বাংলাদেশের বৃহত বিল চলনবিল এখন মধুর বিলে পরিণত হয়েছে। চলনবিলের মাঠ গুলোতে এখন মাঘী সরিষার হলুদ ফুলের সমারোহ। দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। হলুদ ফুলে-ফুলে, নেচে-নেচে, ছুটে-ছুটে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে খামারীদের মৌমাছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে চলনবিল এলাকা থেকে ত্রিশ কোটি টাকার মধু সংগ্রহ করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন এ শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা।
সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খামারীদের মৌবাক্সের মৌমাছি সরিষার ফুলে ফুলে ছুটে যে মধু সংগ্রহ করছে মৌখামারীরা সে মধুগুলি সংগ্রহ করছেন। এখনো বিক্রি খুব একটা শুরু হয় নি। ক্রেতার অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছেন মৌখামারীরা।
মধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট সক্রিয় থাকায় চলনবিল এলাকায় প্রচুর পরিমানে মধু উৎপাদন হলেও মৌচাষীরা অনেক সময় কাঙ্খিত লাভ করতে পারেন না। মধু প্রক্রিয়াজাত করণের ব্যবস্থা না থাকায় কম দামে হলেও স্থানীয় বাজারে মধু বিক্রি করতে বাধ্য হন খামারীরা।
জানা গেছে, প্রতি বছর পৌষ মাসে চলনবিল এলাকার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, বড়াইগ্রাম, গুরুদাসপুর, তাড়াশ, সিংড়া, উল্লাপাড়ার পশ্চিমাংশসহ এর আশপাশ এলাকার মাঠগুলো ছেয়ে যায় হলুদ সরিষা ফুলে।
এসময় সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহ করতে অগ্রহায়নের শেষ থেকে পাবনা নাটোর সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার মৌখামারীদের পাশাপাশি সাতক্ষিরা, খুলনা, বাগেরহাট, নড়াইল, গাজীপুর, রংপুর, দিনাজপুর, চাপাইনবাবগঞ্জ, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাও, নীলফামারীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মৌখামারীরা মধু সংগ্রহের জন্য চলে আসেন চলনবিল এলাকার মাঠ গুলোতে।
বিলে অস্থায়ী আবাস গড়ে তোলেন তারা। খামারের মৌবাক্স গুলো তারা সরিষা খেতের পাশে স্থাপন করেন এবং কয়েক দিন পর পর মধু সংগ্রহ করেন।
চাটমোহর-মান্নাননগর সড়কের ধরমগাছা গ্রামের পাশে মৌখামার স্থাপন করেছেন নাটোরের লালপুরের কদমছিলান গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক এবং বড়াইগ্রামের কৃষ্ণপুর গ্রামের সুমন প্রাং। তারা জানান, প্রায় ৬৫ টি মৌবক্স রয়েছে আমাদের।
মধু সংগ্রহ শুরু করেছি। তবে এখনো বিক্রি শুরু হয় নি। প্রতি কেজি মধু ২শ থেকে ৩শ টাকায় বিক্রি হয়। তবে এ বছর এখনো বাজার ঠিক হয়নি। আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লাভ করতে পারবো।
এ ব্যাপারে পাবনা মৌচাষী সমবায় সমিতির সভাপতি ও উত্তরবঙ্গ মৌচাষী সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম জানান, এ বছর চলনবিল এলাকায় ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। সরিষা ফুল থেকে আমরা মধু সংগ্রহ করছি। প্রায় এক হাজার খামারী চলনবিলের বিভিন্ন মাঠে মধু সংগ্রহ করবেন। অনেকে ইতিমধ্যে সংগ্রহ শুরু করেছেন।
প্রায় সারা দেশের খামারী চলনবিলে মধু সংগ্রহে আসেন। আমরা তাদের এলাকা ভাগ করে দেই। আশা করছি চলতি মৌসুমে চলনবিল এলাকা থেকে ৩০ কোটি টাকার মধু উৎপাদন সম্ভব হবে। বড় বড় মধু ক্রেতারা এখনো মধু কেনা শুরু করেন নি। ফলে ক্ষুদ্র খামারীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়