বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ চৈত্র ১৪ ১৪৩০ ১৮ রমজান ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ১১ জানুয়ারি ২০২২
পাবনার ঈশ্বরদী শহরের পাশের ইউনিয়নের নাম ২নং পুরাতন ঈশ্বরদী ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নে নদী ভাঙন জনিত কারণে ৪০টি পরিবার তাদের সহায় সম্বল হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করাকালে স্থানীয় প্রশাসনের মৌখিক অনুমতিতে খাস জমিতে ঘর তুলে বসবাস করে আসছিলেন।
কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত এসব পরিবারের সদস্যরা স্থানীয় প্রভাবশালীদের কারনে গত ৪ দিন ধরে অনেকটা বন্দী জীবনযাপন করছেন। তাদের বাড়ির সামনের সরকারি জমি দখল করতে বেড়া দিয়ে ঘিরে দিয়েছেন স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী।
গতকাল সোমবার (১০ জানুয়ারি) সরেজমিন পুরাতন ঈশ্বরদীর বস্তিপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, এসব বাড়ির সামনে দিয়ে মোটা তারের বেড়া দিয়ে দখল করে নেওয়া হয়েছে ওই ৪০ পরিবারের দখলে থাকা জমি। প্রভাবশালীদের তৈরি এই বেড়ার কারণে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে নদী ভাঙ্গা পরিবারগুলো। গত বৃহস্পতিবার থেকে এসব পরিবারের সদস্যরা বাড়ির বাইরে বের হতে না পেরে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
স্থানীয় প্রভাবশালী জয়নাল, বাচ্চু, তারেক, লিয়াকত, হাশেম আলী, রঞ্জিতসহ কয়েকজন মিলে এই বেড়া দিয়েছেন বলে জানান স্থানীয়রা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বস্তিপাড়া এলাকার এসব বাড়ির সামনে দিয়ে মোটা তারের তৈরি তার দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়েছে। বেড়া ডিঙ্গিয়ে বের হতে চাইলে বস্তির চারপাশের জমির মালিকরা তাদের বাধা দিচ্ছেন। ফলে তারা বাড়ি থেকে বাইরে বের হতে পারছেন না। নিম্ন আয়ের শ্রমিক ও দিনমজুর শ্রেণির এসব পরিবার কাজ হারিয়ে এখন মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বস্তি এলাকার নির্মান শ্রমিক শ্রমিক মসলেম হোসেন জানান, তার বাড়ি থেকে কোথাও দিয়ে বের হওয়ার জায়গা নেই। পিছনে নিজের বাড়ির বেড়া কেটে বের হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পাশের জমির মালিকদের বাধার কারণে তাও বের হতে পারছেন না।
ফলে কাজে যেতে পারছেন না তিনি। তার পরিবার রয়েছে অবরুদ্ধ অবস্থায়। বস্তির বাসিন্দা মরিয়ম বেগম জানান, তারা নদী ভাঙার কারণে এই খাস জমিতে বাড়ি কয়েক বছর থেকে বসবাস করছেন। এখন তার বাড়ির সামনে তারের বেড়া দেওয়া হয়েছে।
ফলে বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না তারা। বেড়া ডিঙ্গিয়ে বের হতে চেষ্টা করলেও তাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। মুস্তব আলী নামে অপর এক ব্যক্তি জানান, তিনি কৃষি জমিতে কাজ করেন। পাশের জমির মালিক হাসেম, রঞ্জিতরা বেড়া দিয়েছে। এখন তারা বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। তিনি সরকারের কাছে এর সুবিচার দাবি করেন। বিলাস নামে অপর এক ব্যক্তি বলেন খাস জমিতে তারা বাড়ি ঘর তৈরি করে অনেকদিন ধরে বসবাস করছেন। এখন জমির চার পাশের মালিকরা বেড়া দেওয়া সহ তাদের বের হতে বাধা দিচ্ছেন। এখন তারা বের হতে পারছেন না। এমনকি শিশু ও নারীসহ কেউই বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। গত ৪ দিন ধরে বস্তির ৪০টি পরিবারের কয়েক’শ মানুষ এভাবে বন্দী জীবন কাটাচ্ছেন।
এ বিষয়ে তারের বেড়া দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত হাসেম আলী বলেন, আমি কারো জমি দখল করিনি, আমার জমির ফসল রক্ষর জন্য বেড়া দিয়েছি। জয়নাল আলী বলেন, লোক চলাচলের কারণে আমার চাষাবাদের ক্ষতি হয়। বাধ্য হয়ে বেড়া দিয়েছি। ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিএম ইমরুল কায়েস এ বিষয়ে বলেন, ঘটনাটি ঈশ্বরদী ও লালপুরের সীমানা এলাকার তাই এ বিষয়ে নাটোরের প্রশাসন ভাল বলতে পারবেন। বিষয়টি সম্পর্কে নাটোরের জেলা প্রশাসক শামিম আহমেদ জানান, বিষয়টি তিনি জানতেন না, কেউ অভিযোগ দেয়নি। তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়