শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১৩ ১৪৩১ ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
পাবনার খবর
প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯
পাবনার আটঘরিয়ায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষরা একটি পুরুষশুন্য বসতবাড়িতে ঢুকে বাড়ির নারী সদস্যদের হাত-মুখ বেঁধে ঘরবাড়ি ভেঙ্গে লুটপাট করে নিয়ে গেছে। বসতবাড়ির চারটি ঘরও তারা রাখেনি রাতের আঁধারে ট্রাকযোগে ঘরসহ মালামাল ট্রাকে করে লুটপাট করে নিয়ে সেখানে সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় আটঘরিয়া থানায় একটি মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। প্রতিপক্ষরা নিরুপায় পরিবারের ভিটেমাটি দখল করে নেওয়ায় তারা অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে বলে অভিযোগে প্রকাশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো কন্দপর্পপুর গ্রামের গাফ্ফারের ছেলে সাগড় (২১), শ্রীকান্তপুর গ্রামের আব্দুল প্রাং এর ছেলে জামিল উদ্দিন (৩০), রাঘবপুর গ্রামের আহসান মিয়ার ছেলে আব্দুল্লাহ মিয়া (৪৮) ও রাঘবপুর গ্রামের হামজার ছেলে গাফ্ফার (৩৫)। অভিযোগে প্রকাশ, আটঘরিয়া উপজেলার দেবোত্তর ইউনিয়নের পুস্তিগাছা গ্রামের আব্দুল মান্নানের সাথে প্রতিবেশী আপাল ও গোপালের বসতবাড়ির জমি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত দন্দ্ব চলে আসছিলো।
ঘটনার দিন ১০ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ২ টার দিকে পুস্তিগাছা গ্রামের শুভ, শান্ত, মোমেন, আব্দুল মান্নানসহ ১০/১২ জন ধারালো অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পুরুষশুন্য ঐ বসত বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়ির নারী সদস্যদের হাতমুখ বেঁধে চারটি ঘরসহ বাড়িতে থাকা সম্পূণ্য কিছু তারা ট্রাকে করে নিয়ে যায়। এ সময় পরিবারের নারী সদস্যদের পাশের বাড়িতে নিয়ে একটি ঘরে আটকে রাখে। পরের দিন দুপুরে খবর পেয়ে দেবোত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহায়মীন হোসেন চঞ্চল ঐ বাড়ি থেকে তাদের উদ্ধার করে।
নির্যাতিত নিরুপায় পরিবারের সদস্য জোসনা খাতুনের অভিযোগ, তারা এঘটনায় থানা পুলিশকে জানানোর পরও তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। পরে তারা পুলিশ সুপারের কাছে বিষয়টি জানালে আটঘরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু এই মামলায় বসতবাড়ির ঘরসহ সম্পূর্ণ কিছু তারা লুটপাট করে নিয়ে ভিটেমাটি ছাড়া কিছুই নেই সেই মামলার উল্লেখ করা হয়নি বলে মামলার বাদী জোসনা খাতুন অভিযোগ করেছেন।
জোসনা খাতুনের অভিযোগ, তার স্বামী ও ভাশুরকে প্রতিপক্ষরা মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশে দিয়ে জেল হাজতে পাঠানোর পর এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
জোসনা খাতুন বলেন, আমরা গরীব, আমাদের তো টাকা পয়সা নাই তাই পুলিশ আমাদের কথা শুনে না। তার অভিযোগ, ভিটে মাটি দখল করে আব্দুল মান্নান সেখানে পাচির দিচ্ছে। আমার দায়ের করা মামলায় আব্দুল মান্নানকে প্রধান আসামী করা হলেও তাকে এই মামলায় পুলিশ ৯ নম্বর আসামী করতে ব্যদ্ধ করেছে।
প্রতিপক্ষরা প্রভাবশালী হওয়ায় গ্রামের মানুষ কিছু বলতে সাহশ পাচ্ছে না। পুস্তিগাছা গ্রামের মোক্তার, আ: রাজ্জাকসহ একাধীক গ্রামবাসী অভিযোগ করে বলেন, রাত ২টার দিকে মসজিদের মাইকের তার কেটে, পল্লিবিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তারা ঘরবাড়ি ভেঙ্গে সবকিছু লট করে গেছে। নিরুপায় পরিবারে এখন অন্যের বাড়িতে বসবাস করছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুল মান্নান আসামী হওয়ায় তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে দেবোত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহায়মীন হোসেন চঞ্চল বলেন, গভীর রাতে ঘরবাড়ি ভেঙ্গে ভিটেমাটি শুন্য করে দেওয়ার ঘটনাটি আসলে ন্যাক্কার জনক।
এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মিজানুর রহমান বলেন, শুক্রবার বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করা হয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি। আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পেরণ করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে যেন কোন স্থাপনা না করা হয় সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রপ্তার করা হবে।
তবে এলাকাবাসী এই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উদ্বোতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
pabnasamachar.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়